Tuesday, October 28, 2025
Google search engine
Homeঅপরাধআড়াইহাজারে মাদকের ১০০ স্পট, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি কামনা

আড়াইহাজারে মাদকের ১০০ স্পট, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি কামনা


আড়াইহাজারে মাদকের ১০০ স্পট, প্রশাসনের কঠোর নজরদারি কামনা


মোঃ মোয়াশেল ভূঁইয়া

স্কুলের টয়লেটে গাঁজার কল্কি আটকে গিয়েছে। তাই বাচ্চারা টয়লেট ব্যবহার করতে পারছিল না। কথাটি শিক্ষকদের মারফত প্রধান শিক্ষকের কানে যায়। তিনি লোক ডেকে এনে ২০০ টাকা দিয়ে টয়লেটটি পরিস্কার করিয়ে দেন। পরদিন আরেক সমস্যা। স্কুলের করিডোরে কে বা কারা প্রস্রাব ও বমি করে গেছে। এবার প্রধান শিক্ষক বিষয়টি ইউএনওকে অবহিত করেন। এই চিত্রটি  উৎরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। পরবর্তীতে আড়াইহাজার থানা পুলিশ ওই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে মাদকের হাটে অভিযান চালায়। কিছুদিন মাদকের হাট বন্ধ ছিল। আবার মাদকের হাট চালু হয়েছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন মাদক বিক্রেতাদের গ্রেপ্তারে কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নেয় না। তবে মাঝে মধ্যে লোক দেখানোভাবে ফটোশেসন মার্কা অভিযান চালায় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। 

উৎরাপুরের পরের গ্রাম বালিয়াপাড়ায় মাদক ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে স্থানীয় ইউপি মেম্বার ও তার সাগরেদদের মধ্যে চলছে দ্ব›দ্ব সংঘাত। মেম্বার সোহেল এর পুরো পরিবার মাদকের সাথে জড়িত। মাদক ব্যবসা করে তারাও রাতরাতি কোটিপতি হওয়ার মিশনে নেমেছে। মেম্বার সোহেল তার মা সোনাই আক্তার বাবা মকবুল মাদক ব্যবসা দেখভাল করে। দিনশেষে মাদকের স্পটের হিসাব বুঝে নেয়। সন্ধ্যার পরেই বালিয়াপাড়া ও পার্শ্ববর্তী উৎরাপুর স্কুল মাঠে মাদকের হাট বসে। আড়াইহাজার থানা থেকে ৫/৬ কিলোমিটার দূরবর্তী এই গ্রামে প্রকাশ্যে মাদকের হাটের কারণে গ্রামে চুরি, ছিনতাই বেড়েছে। থানা থেকে দূরে বলে পুলিশ আসার আগেই ওরা সোর্স মারফত খবর পেয়ে লাপাত্তা হয়ে যায়।গোপালদী পৌরসভার রামচন্দ্রদী ও উলুকান্দিতে মাদকের স্পটগুলো বেশ জমজমাট। রাত পোহালেই কোরবানির ঈদ। সবার হাতেই টাকা। পাওয়ারলুম শ্রমিকরা সপ্তাহ শেষে বিল পাচ্ছে। রামচন্দ্রদীতে সেই রুবেল, খুদি বেগম,হাসিনা, মোজাফ্ফর, সাত্তার, জামাল,  হাবি ও শফির আস্তানায় মাদক সেবনের পাশাপাশি জমজমাট জুয়া চলছে। হাবির বাড়ীতে প্রতিদিন রাতে মাদকের হাট বসে।  উলুকান্দিতে হালিমা, রাসেল, মনির ও আক্তার বিশেষ অফারে মাদকের আস্তানা চালাচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকেই গ্রামগুলোতে মাদকের হাট বসছে। সাধারণ মানুষ কিছুই করতে পারছে না।

অনুসন্ধান করে জানাগেছে, আড়াইহাজার উপজেলায় শতাধিক স্পটে মাদকের পাইকারী কারবার চলছে। এ সকল স্পট থেকে মাদক নিয়ে খুচরা বিক্রেতারা ছড়িয়ে পড়ে উপজেলার অধিকাংশ  গ্রামে। গ্রামের তরুণ ও যুবসমাজ মাদকে আসক্ত হয়ে নানান অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে। প্রশাসন যেটুকু তৎপরতা চালায় তা মাদক দমনে উপযুক্ত নয়। শুধু চিহ্নিত কিছু স্পটে অভিযান চালিয়ে মাদক উদ্ধার করলেই মাদকের আগ্রাসন থামানো মুশকিল। কেননা বিক্রেতারা ক্রেতাদের চাহিদা অনুসারে আজকাল লোকেশন বলে দিলে মাদক হোম ডেলিভারী দেয়।

মেঘনা নদীর তীর ঘেষে বিশনন্দী ইউনিয়নের অবস্থান। সেই বিশনন্দী গ্রামে হযরত আলী, আল আমিন মাদকের আসর জমায়। তাছাড়া মর্দাসাদি গ্রামের জাকারিয়া, জাঙ্গালিয়া গ্রামের  আক্তার, বিল্লাল, দাইরাদির ডেঞ্জারাস কবির, ডালিম,  দয়াকান্দার শওকত, গিরদা গ্রামের ডালিম, দুপ্তারার আপন, বাজবী গ্রামের মোস্তফা, পুরিন্দা’র হারুণ, লস্করদীর বসির, মারুয়াদির জহির, বগাদি’র বাবুল, গাজীপুরার সুফিয়ান. কাহিন্দি গ্রামের সেলিম, ছোট ফাউসা গ্রামের মাহাবুব, দিঘিরপাড়ের রাজু, শিবপুরের  মামুন , কাউছার, সিয়াম, আবজাল, কৃষœপুরার দেলোয়ার, মাহমুদ আলী,  শরীফপুরের মোস্তফাসহ আরো কয়েকজন মাদক বিক্রি করছে।  মৌজ্যাকান্দার মরি বেগম শুক্কুর, মনির ও জাকির প্রতিযোগিতা করে মাদক কারবার চালিয়ে যাচ্ছে।

তাছাড়া  আড়াইহাজার থানার পাশেই শিবপুর, লাসরদিতে ৬ জন মাদকের ডিলার রয়েছে।  দিঘীরপাড়, মুকুন্দী, গাজীপুরা, বাঘানগর, শ্রীনিবাসদী, মাহমুদপুর, উচিৎপুরা, প্রভাকরদী, ফাউসা, মারয়াদী, ব্রাহ্মন্দী, ঝাউগড়া, পাল্লা, কাঠালিয়াপাড়া, গিরদা ও চনপাড়া গ্রামে সন্ধ্যার পরেই মাদকের  হাট বসে।

জানাগেছে, বিশনন্দী ফেরিঘাট দিয়ে আড়াইহাজারে মাদক ঢুকে। র‌্যাব এ যাবত ৫০০ কেজির মত গাঁজা উদ্ধার করেছে। গ্রেফতার করেছে শতাধিক মাদক পাচারকারীকে। কিন্তু ওরা সাজা শেষে বের হয়ে এসে সেই একই অপকর্মে লিপ্ত হয়। তবে আড়াইহাজারে মাদকের বিস্তারের কথা অস্বীকার করে ওসি মো: আজিজুল হক হাওলাদার বলেন, পুলিশ নিয়মিত মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে। মাদক ব্যবসা অনেকটা কমে গেছে। বেশ কিছু চিহ্নিত মাদক বিক্রেতা গ্রেফতার হয়ে জেল খাটছে

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments