Wednesday, October 29, 2025
Google search engine
Homeঅপরাধগুনে গুনে ঘুষ নেন আমিনপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তা রোমানা করিম

গুনে গুনে ঘুষ নেন আমিনপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসের কর্মকর্তা রোমানা করিম


নিজস্ব প্রতিবেদক
:–নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার আমিনপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। সেবা নিতে সেখানে পদে পদে ঘুষ দিতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ঘুষ না দিলে ফাইলই ধরেন না অথবা ভুল রিপোর্ট দিয়ে হয়রানী করা হয় সেবাপ্রার্থীদের। রীতিমতো শতাংশ প্রতি তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা রেট নির্ধারন করে ঘুষ নেন বলে জোরালো অভিযোগ এবং প্রমান পাওয়া গেছে।এছারাও রয়েছে (খ) তফসিল এর নামে মোটা অংকের ঘুষের অভিযোগ। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ইউনিয়ন ভুমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা উম্মে রোমানা করিমের নেতৃত্বে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে ঘুষ বাণিজ্য। প্রতিবাদ করলে বা ঘুষ দিতে না চাইলে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে নামজারী করতে ও সরকারকে খাজনা দিতে বাঁধার সৃষ্টি করা হয়। কথায় কথায় তিনি নারায়ণগঞ্জের এক প্রভাবশালী নেতার আত্মীয় বলে নিজেকে পরিচয় দিয়ে সেবাপ্রার্থীদের হুমকি প্রদান করেন। 

তারা আরও অভিযোগ করেন, ঘুষ না পেলে একটি ফাইলেও স্বাক্ষর করেন না তিনি। শুধু তাই নয়, একজনের জমি আরেকজনকে খারিজ দিয়ে ঝামেলা লাগান এবং সংশোধনের নামে আবারও মোটা অংকের উৎকচ দাবি করে থাকেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আমিনপুর আওতাধীন বিভিন্ন মৌজার বাসিন্দারা জিম্মি হয়ে আছে এই ভুমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা তথা নায়েব উম্মে রোমানা করিমের কাছে। তিনি এই অফিসে যোগদান করার পর থেকে দুর্ণীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে আমিনপুর ইউনিয়ন ভুমি অফিস। নামজারী করার জন্য সরকারী ফি ১১’শত টাকা নির্ধারিত থাকলেও এর বাইরে তিনি নিজের মতো করে ফি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পৌরসভার বাজারসহ প্রতিটি এলাকার সড়কের পাশের জমির নামজারি করতে হলে শতাংশ প্রতি ৫ হাজার  এবং অন্যান্য যে কোনো জমির নামজারি করতে হলে শতাংশ প্রতি ৩-৪ হাজার টাকা তাকে দিতে হবে বলে নির্ধারণ করেছে। রোমানা আক্তারকে সহযোগিতায় রয়েছেন মোজাম্মেল ও মামুন নামের দুজন ওমেদার । ঘুষ দিতে না চাইলে বা এর কম দিলে ভুল রিপোর্ট দিয়ে হয়রানী ও নামজারী বাতিল করার অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় মুখ খুলতে সাহস পায় না কেউ।

আরো জানা গেছে, এলাকা ভিত্তিক দালাল ও ওমেদার নিয়োগ করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ওমেদার মামুন ও মোজাম্মেল বাড়ী বাড়ী গিয়ে নামজারীর কথা বলে উৎকচ নিয়ে আসে এবং জনগনকে তাদের তাদের মাধ্যমেই খারিজ করতে বাধ্য করে। এদের মাধ্যমে জমির কাগজপত্রে এদিক সেদিক করে বিপুল পরিমান টাকার মালিক বনে গেছেন ইউনিয়ন অফিসের কর্মকর্তা ও ওমেদারগন।


দুর্নীতি দমন কমিশন গোপন তদন্ত করলেই রোমানা করিমের বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছে বলে বের হবে মনে করেন ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল। দুর্নীতিবাজ ও সাধারণ মানুষকে হয়রানি করে অর্থ আদায়কারী উম্মে রোমানা করিম ওদার মামুন ও মোজাম্মেলকে প্রত্যাহার সহ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান ভুক্তভোগীরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুমি অফিসের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, এমন দুর্নীতিবাজ অফিসার আমরা জীবনেও দেখি নাই। সকালে অফিসে এসেই টাকা টাকা করে। কয়টা নামজারির আবেদন জমা পড়ছে, সেই খবর নিয়ে হিসেব করতে বসে, কোনটা থেকে কতো টাকা নিবে? টাকা ছাড়া ফাইলই দেখেন না। আগে বলে, টাকা কতো আছে সেটা বলো। এমনকি আমাদের নিজস্ব আত্মীয় স্বজনের নামজারী করতেও নায়েব রোমানা করিমকে উৎকচ দিতে হয় বাধ্যগত।

তারা জনান উপজেলায় মোট ১১ টি ইউনিয়ন ভুমি অফিস আছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী দুর্নীতিবাজ ও ঘুষখোর তিনজনের মধ্যে ১ নম্বর হচ্ছে রোমানা। 


এছাড়া নাম প্রকাশে ভূমি কর্মকর্তারা জানান এই দূর্ণীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূদক তদন্ত চালালে চাঞ্চ্যল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে তারা মনে করেন। এছারাও এই প্রতিবেদকের কাছে নায়েব রোমানার ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও ক্লিপ পৌঁছে, যাতে দেখা যায় নায়েব রোমানা আক্তার ঘুষের টাকা গুনে গুনে নিচ্ছেন।


এসব অভিযোগে বিষয়ে কথা বলতে ইউনিয়ন ভুমি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা উম্মে রোমানা করিমের মোবাইলে যোগাযোগ করার চেষ্টা করে বারবার কল দিলেও কল রিসিভ করেননি তিনি।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments