সোনারগাঁয়ের সামাদ মুন্সি মসজিদের উন্নয়ন ও দানবাক্সের অর্থ হাতিয়ে কোটিপতি
আজকের সংবাদ ডট কমঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌরাস্তা বাসস্ট্যান্ডের পাশে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ মুন্সী মসজিদের উন্নয়ন ও দানবাক্সের আয়ের সকল অর্থ হাতিয়ে নিয়ে কোটিপতি বনে গেছেন।
স্থানীয়রা জানান,মোগরাপাড়া ইউনিয়নের হাবিবপুর গ্রামের মৃত.নোয়াব আলী বেপারীর ছেলে সামাদ মুন্সী। প্রায় দুই যুগ ধরে অবৈধভাবে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হিসেবে বহাল রয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক মুসুল্লি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান,সামাদ মুন্সীর লেবাস এক, আর কাজ করেন আরেক।
স্থানীয় কয়েকজন রাজনৈতিক কর্মী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সামাদ মুন্সি বিএনপি সরকারের সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রেজাউল করিমের ঘনিষ্ঠ কর্মী।
জোট সরকারের সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি হাবিবপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হন তবে সরকারের পরিবর্তন ঘটলেও তিনি বহাল থাকেন সভাপতি পদে।
মসজিদে নামাজ পড়তে আসা অনেক মুসুল্লি জানান, এই মসজিদের আয় উন্নতি হলেও এর কোন উন্নয়ন না করে লুটেপুটে খাচ্ছেন এই সভাপতি সামাদ মুন্সি।
হাবিবপুর গ্রামের হাসান,শাহিন,খোরশেদ, ফারুকসহ অনেকে জানান মসজিদের টাকার পাশাপাশি সামাদ মুন্সি নিরীহ লোকদেরকে জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে অভিযুক্ত আবদুস সামাদ মুন্সীর বিরুদ্ধে ২০১৬ ইং ১৬ নভেম্বর দৈনিক কালেরকণ্ঠ পত্রিকায় “চাঁদা তুলে কোটিপতি” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে রহস্যজনক কারণে তখন স্থানীয় প্রশাসন তাঁর বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
সরেজমিনে খোঁজ নিতে গেলে মোগরাপাড়া বাসস্ট্যান্ডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন ফলের দোকান থেকে শুরু করে টং দোকান ও মার্কেটের বিভিন্ন দোকানে মসজিদের নামে সামাদ মুন্সী চাঁদা তোলেন এমন কি ফ্লাক্সি লোডের দোকানে মোবাইলে টাকা ভরে জায়গা ভাড়া বাবদ টাকা কেটে দেন।
সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদের ফেইসবুক স্টেটাস থেকে জানা গেছে, আল্লাহর ঘর মসজিদের নাম করে সমস্ত দোকানপাট এবং ফুটপাত থেকে যে চাঁদা উত্তোলন করা হচ্ছে যার মাসিক আয় দাঁড়ায় লক্ষ লক্ষ টাকা। সাধারণ হিসাবে মাসিক আয় ১,০০০০০/- টাকা হলে বাৎসরিক আয় হয় ১২,০০০০০/- টাকা। তবে ২৫ বছরে নরমাল হিসেবে ৩ কোটি টাকা আয় থাকার কথা। তার মধ্যে বছরে ২টি ঈদ ও একটি রমজান মাস দানের পরিমাণ আকাশ ছোঁয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে ভিন্ন।
এ ব্যাপারে মসজিদের সেক্রেটারী জানান,মসজিদ কমিটি ঋন আছে প্রচুর, তবে ফান্ডে নগদ কোন টাকা নেই। তিনি ২৫ বছর ধরে অদৃশ্য ক্ষমতার জোরে অত্র মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে রয়েছেন। এভাবে চাকরি বা ব্যবসা না করে তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যান।
আমরা এবিষয়ে তদন্ত করে মসজিদ কমিটিসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নিকট সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং জনগনের সম্মুখে টাকা আত্মসাতকারীর মুখোশ উন্মোচন করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন