আজকের সংবাদ ডট কমঃ ঈদের আনন্দে মাতোয়ারা মুসলিম বিশ্ব। বছরে এক বা দুটি দিন একটু প্রিয়জনের সাথে সময় কাটানো। মা-বাবা, স্ত্রী-সন্তান বা আত্মীয়-স্বজন এই দিনটির জন্যই অপেক্ষা করে। আর ঈদের আনন্দ একটু ভাগাভাগি করে নিতে মানুষ নাড়ীর টানে অনেক দূরদুরান্ত থেকে বাড়ি ফিরছেন শত কষ্টের মধ্যেও। ব্যতিক্রম শুধু পুলিশের ক্ষেত্রে ফাঁকা রাস্তায় দায়িত্বে রয়েছেন তারা। দেশের মানুষের নিরাপত্তায় নিয়োজিত এ বাহিনীর ছুটির বদলে যেন দায়িত্ব বেড়েছে বহুগুণ।
নানা সমালোচনার মধ্যেও পুলিশের সেবাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। বাহিনীটির ২৪ ঘণ্টার সতর্ক চোখ আর চেষ্টাতেই স্বাভাবিক আর নিরাপদ জীবন সম্ভব। আর এ কারণে সাধারণের ঈদ পার্বণ আসে না পুলিশের জীবনে।
সোনারগাঁয়ের প্রতিটি ঈদগাহ ময়দানে সতর্ক দৃষ্টি রাখছিলেন পুলিশ যেন কোনো হাঙ্গামা না হয়, যেন কারও নিরাপত্তায় হুমকি না আসে। সকাল সাত থেকে তাদের ডিউটি।
ঈদের দিন বলে আয়েশ করে ঘুমানোও যায়নি। ভোরে ঘুম থেকে উঠে গোসল করে নিত্য দিনের পোশাক পরেই তৈরি হতে হয়েছে ঈদগাহে আসার জন্য। তবে নামাজ পড়তে নয়। সবাই যখন ঈদের নামাজ পড়ছেন তারা তখন অস্ত্র হাতে নিরাপত্তা পাহারায় ছিলেন।আবুল কালাম আজাদ তাদের মধ্যে একজন। উপ-পরিদর্শক হিসেবে কাজ করেন সোনারগাঁ থানায়।
আজাদ জানান ‘কিসের ঈদ পুলিশের?’ সবাই ঈদ করলে সাধারণ মানুষের দেখা-শোনাকে করবে?। আমাদের মানুষের সেবাই সব সময় নিয়জিত থাকতে হয়। মানুষের ঈদ নির্বিঘ্ন করাই আমাদের দায়িত্ব। আর দায়িত্বের মধ্যেই আমাদের আনন্দ। বলেন আর সবার মতোই তারও স্বজনের জন্য মায়া আছে, আছে কাছে যাওয়ার আকুতি, আছে একসঙ্গে বসে ভালোমন্দ খাওয়ার বাসনা। কিন্তু কি আর করা, পেশাটাই এমন যে এখানে আবেগের স্থান নেই। অভিমানী সন্তানকে কীভাবে মানাবেন, তা জানেন না। তাই ভয়ে বাড়িতে ফোন করেন না।
সোনারগাঁ থানার ওসি (তদন্ত) হেলাল উদ্দিন ডেইলি সোনারগাঁকে জানান, সবাই ঈদ করতে গেলে নিরাপত্তার দেখভাল করবে কে?। ঈদকে সামনে রেখে সোনারগাঁয়ের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সব সময় ততপর রয়েছে। সোনারগাঁয়ে ঈদকে কেন্দ্র করে ঈদের নামাজ ও বিনোদন স্পটগুলোতে বাড়ানো হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। কেউ ঈদগাহে, কেউ সড়কে, কেউ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায়, কেউ অপরাধী ধরতে কেউ বা অপরাধ ঠেকাতে দায়িত্ব পালন করছেন।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, “পুলিশের চাকরি অনেকটাই ‘থ্যাংকলেস জবের’ মতো। এটা মেনেই আমরা কাজ করি। জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকলে এই পেশায় কাজ করা সম্ভব না। চাকরি জীবনের শুরুতে পারিবারিক পরিবেশের জন্য হয়ত মন খারাপ হয়, কিন্তু পরে ধীরে সয়ে যায় সব।”
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের এসপি হারুন-অর-রশিদ বলেন , আমরা নিজেদের দেশ সেবায় উৎসর্গ করেছি। যে কোন মূল্যে দেশের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখাই আমাদের একমাত্র কাজ। অন্য সব পেশার মানুষের মতো পুলিশ সদস্যদেরও নানা সময় বিচ্যুতি থাকে। এ জন্য গালমন্দও কম না। কিন্তু জনগণের প্রতি আমাদের ভালোবাসা আর ত্যাগটা সেভাবে স্বীকৃতি পায় না, এই দুঃখবোধ নিয়ে তাদের জন্য হাসি মুখে কাজ করে যাই কাজ করে যাই।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন