একটি সুন্দর ও শান্তিময় পানছড়ি বির্নিমানে সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই,সদ্য নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব
মিঠুন সাহা খাগড়াছড়ি প্রতিনিধিঃ খাগড়াছড়ির জেলার পানছড়িতে শনিবার (২৪ আগষ্ট)একটি অন্যান্য সূর্যদ্বয় তার ব্যতিক্রমী বার্তার ছোঁয়া দিয়ে গিয়েছিল সবার মাঝে।ভোরের কাক ডাকা পাখিও বুঝতে পেরেছিল তার আগমনী বার্তা।তাই তো পাখিরা উম্মুক্ত ভাবে একটা শিখল ভাঙা পাখির মতো উড়ছিল।
গতকালের দিনটা যেন অনেক বছরের একটা অন্ধকারময় জগতের পরিসমাপ্তি ঘটার দিন।সারাটা সকাল সর্বস্তরের জনগণ একটা উৎকন্ঠা,উদ্বেগ অস্থিরতা মধ্যে দিয়ে অপেক্ষা করেছিল এক শুভ মাহেন্দ্রক্ষণের জন্য।যেই মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় ৭ বছর ধরে অপেক্ষা করছিল নিরিহ জনগণগুলো।কে হবে এই পানছড়ির শান্তিময় বার্তার অগ্রদূত??
কারণ দীর্ঘ ৭ বছরের এক অসহ্য যন্ত্রণায় পিষ্ট হয়ে গিয়েছিল সকলে। তাই তো মানুষ মনে মনে শপথ নিয়েছে অসাম্প্রদায়িক মানুষের হাতে আওয়ামীলীগের নেতৃত্ব তুলে দেওয়ার।যারা ঢেলে সাজিয়ে তুলবে এই পানছড়িকে।
সেই শুভক্ষণ ছিল গতকাল বিকাল ৫ টার সময়।এর আগে দুপুর ১ টার সময় প্রথম অধিবেশনে ত্রিবার্ষিক কাউন্সিল নিয়ে আলোচনা সভা হয়েছিল।সেই সময়
প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ির জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও ২৯৮ নং আসনের সংসদ সদস্য কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরা।অনেক গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যের মধ্যে মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন তিনি।
স্বাধীনতার ইতিহাস পাঠ করলেন উপস্থিত জনসাধারণের মাঝে।বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।ওনার বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় প্রথম অধিবেশন।
প্রথম অধিবেশন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে প্রকৃতির বৃষ্টির জ্বলে অগ্রীম স্বাগতমের বার্তা দিয়ে গেল সবাইকে, কিন্তু কেউ বুঝেছিল কিনা জানিনা।তবে লেখক ঠিকই বুঝেছিল।এই যেন অন্যরকম কিছু ঘটতে চলেছে।
তবে নিশ্চয় তারা বুঝতে পেরেছিল যাদের বিশ্বাস ছিল তুঙ্গে।যারা প্রিয় নেতাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন তাদের বিশ্বাসের বড় জয় এসেছে গতকাল।তখন বিকাল গড়িয়ে সূর্য পূর্ব দিক থেকে পশ্চিম আকাশের দিকে রওনা হয়েছে। তারাও জেনে গেছে তাদের আয়োজন শেষ।তখন সন্ধ্যা ছুঁই ছুঁই। পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে জড়ো হলো হাজারো জনতা।তাদের চোখে মুখে যেন এক অস্থিরতা কাজ করছিল,যেন তর সয়ছিল না।কে হতে হচ্ছে আগামী দিনের কান্ডারী।
সন্ধ্যা ঠিক ৬ টার সময় ঘোষণা এলো একেক করে সবার মার্কা ও নাম।সভাপতি আবুল মমিন, সাধারণ সম্পাদক বিজয় কুমার দেব এই দুইটি নাম মুহুর্তের মধ্যে পুরো পানছড়ির আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হয়েছিল।পুরো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে প্রশংসায় মুখরিত হয়ে গিয়েছিল তারা দুইজন।অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা বার্তায় ছড়িয়ে গিয়েছিল পুরো সোস্যাল মিডিয়া।
উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন,একজন কর্মী বান্ধাব নেতা থেকে জননেতা হয়েছেন বিজয় দা।অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনা নিয়ে সব সময় ওনি কাজ করে গেছেন এবং যাচ্ছেন ।ওনার কাছে কাউকে নিয়ে বৈষম্য করতে আজও দেখিনি।পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় সবচাইতে খুশি হতে দেখেছি সাধারণ জনগণকে।আমি তার সাফল্য কামনা করি।
ছাত্রলীগের সভাপতি শ্রীকান্ত দেব মানিক বলেনঃছাত্রলীগ থেকে আওয়ামীলীগের নেতৃত্বে জননেতা বিজয় কুমার দেব নির্বাচিত হয়েছেন। এতে দলের তৃণমুলের নেতাকর্মীরা উপকৃত হবে এবং পানছড়ি উপজেলা সম্প্রীতির পানছড়ি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
পানছড়ি বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব অলি আহম্মেদ বলেনঃ বিজয় যোগ্যতা বলে পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় অনেক অনেক খুশি হয়েছি।সে একজন ভালো ও মহানুভব ব্যক্তি।তার অনেক প্রশংসা শুনেছি। সে আমাদের শিক্ষক সমাজেরও গর্ব।তার উত্তরোত্তর সাফল্য ও সমৃদ্ধি কামনা করি।
বিজয় কুমার দেব বলেনঃআমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই ছাত্রলীগ,যুবলীগ ও আওয়ামীলীগসহ সবাইকে যারা আমার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।আপনাদের দোয়া ও আশীর্বাদে আমার এই বিজয়।আমি সব সময় আপনাদের সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই।একটি সুন্দর ও শান্তিময় পানছড়ি বির্নিমানে আমার প্রচেষ্টা সব সময় অব্যাহত থাকবে।
এক নজরে বিজয় কুমার দেবের সংক্ষিপ্ত জীবনী।
বাংলাদেশের প্রত্যেকটা উপজেলায়,প্রত্যেকটা এলাকায় গ্রামে,গঞ্জে সর্বত্রে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ/আওয়ামীলীগের আদর্শ প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পেছনে থাকে কিছু নিঃস্বার্থবান নিবেদিত মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম,থাকে একেকটা যুদ্ধ জয়ের গল্প।একটা সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করতে এবং সেই সংগঠনের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে বহু ত্যাগ তিতিক্ষা সহ অনেক বন্ধুর পথ মারিয়ে যেতে হয়।একেকটা পাহাড় সমান বাধাকে ডিঙিয়ে যাওয়ার পরে তবেই আসে সোনালী দিনের দেখা।
আজকে খাগড়াছড়ি জেলার সীমান্তবর্তী অঞ্চল পানছড়ি উপজেলায় সুষ্ঠ, সুন্দর ও শান্তি প্রিয় পরিবেশ পাওয়ার পেছনে রয়েছে কিছু নিঃস্বার্থবান নিবেদিত মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম।যারা মৃত্যুর দোয়ারে দাঁড়িয়েও পেছনে ফিরে আসেন নি,পানছড়ির মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার আশায় এবং একটা শান্তিময় পানছড়ি গড়ার প্রত্যাশায়।তেমনি খাগড়াছড়ির জেলার পানছড়ি উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পেছনে এবং সেই সংগঠনকে টিকিয়ে রাখার পেছনে আছে এমন কিছু সংখ্যক নিবেদিত মানুষের গল্প।যারা প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে আজকে এই পানছড়িতে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, আওয়ামীলীগের আদর্শকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং টিকিয়ে রেখেছেন।তাদের মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন বাবু বিজয় কুমার দেব
রাজনৈতিক জগতে ওনার আর্বিভাবের পথ এতোটা সুগম ছিল না।সেইদিনের দিনগুলো বিপদ সংকুলময় একেকটা পরিবেশ ছিল।ছিল অসংখ্য মৃত্যুকূপ।১৯৭৫ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পরে সমগ্র জেলা উপজেলার মতো পানছড়ি উপজেলায়ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট থেকে মুছে দিতে চেয়েছিল তার নাম ও ঐতিহাসিক সংগঠন আওয়ামিলীগের নাম।সেই সময় পানছড়িতে গুটি কিছু মানুষ শুধু আওয়ামিলীগ করত।তাদের কাছে সবসময় একটা আতঙ্কের পরিবেশ ছিল।কখন জানি তাদের উপর হামলা করে।তৎকালীন সময় পানছড়িতে জনসাধারণের উপর অন্যায় ও অতর্কিতভাবে জুলুম ও অত্যাচার করত বিএনপি জামাত ও জাতীয় পার্টি।তাদের অশুভ রাজনীতি সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছিল।
তৎকালীন সময় সেই বিপদ সংকুলময় মুহুর্ত্বে ১৯৮১ সালের দিকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাণী নিয়ে সমগ্র জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে আর্বিভাব হয় কিছু ছাত্রনেতার।
সেই সময়ে বাবু শরৎ কুমার ত্রিপুরা,বিজয় কুমার দেব,জয়নাথ দেব,মিলন কবির (মাষ্টার) সহ গুটি কিছু তরুণ ছাত্রনেতাদের হাত ধরে পানছড়িতে বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ছাত্রলীগের প্রবেশ ঘটে।মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তার আদর্শের বাণী পৌঁছে দিতে থাকে সেইসব তরুণ ছাত্রনেতারা। অশুভ রাজনীতিবিদদের মরণ ছোবলের হাত থেকে বাঁচতে অনেক সময় তাদের গভীর রাতের অন্ধকারে বন জঙ্গলে রাত কাটাতে হতো।দলের কেন্দ্রীয় ডাকে এবং অনেক সময় স্ব স্ব উদ্যোগে নির্জন পরিবেশে একত্রিত হয়ে মিটিং করতে হতো।তবুও তারা থেমে যান নি।তাদের হাত ধরে এভাবে ধীরে ধীরে বদলে যেতে থাকে সবকিছু। মানুষ শান্তির নীড় খুঁজে পাই আওয়ামীলীগের এই রাজনীতির সংগঠনের মধ্যে।সেই সময় পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন শরৎ কুমার ত্রিপুরা।এর পর পর্যাযক্রমে দায়িত্ব আসে বাবু বিজয় কুমার দেব এর হাতে।এভাবে পানছড়ির সমস্ত এলাকায় বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাণী প্রচার হতে থাকে।অনেক মানুষ সেইসব নোংরা রাজনীতির পথ ত্যাগ করে যোগদান করে আওয়ামীলীগ,যুবলীগ আর ছাত্রলীগে ।পানছড়ির সমস্ত ইউনিয়ন গ্রামে,গঞ্জে সমর্থক বাড়ে অকল্পনীয় ভাবে।
সেই ৯০ এর দশকের আগে ১৯৮৯ সালের দিকে দুই মেয়াদে পানছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে আর্বিভাব হয়েছে আজকের বিজয় কুমার দেবের।এরপর ১৯৯৭ সালে আওয়ামিলীগ যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমানে তিনি পানছড়ি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে আছেন। তিনি ৯০ এর দশকের আগে থেকে ছাত্রলীগের তুখোড় একজন রাজনৈতিক কর্মী থেকে আজকে একজন সফল রাজনীতিবিদ।পানছড়ির রাজনৈতিক জগতের একটি আদর্শের নাম বলে এখন সর্বত্রে বিরাজিত।রাজনৈতিক জগতের বাইরেও হিন্দু,মুসলিম, বৌদ্ধ,খৃষ্টান তার কাছে কোন ভেদাভেদ নেই। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সব শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে মধ্যমনি হিসাবে পরিচিত রয়েছেন ওনি।
সব সম্প্রাদায়ের মানুষের বিপদে আপদে একজন বন্ধুর মতো আপনজনের মতো পাশে থেকেছেন।কারো কোন সমস্যা হলে তিনি তৎক্ষনাৎ ছুটে যেতেন এবং সেই সমস্যার সমাধান করতেন।ওনার কল্যাণে সম্পূর্ণ বিনা টাকায় সরকারি চাকরিতে (মাষ্টারি)নিয়োগ পেয়েছেন পানছড়ির সাওঁতাল সম্প্রদায়ের গরীব ঘরের চাঁদনি নামের একজন সাঁওতাল মেয়ে।এরকম অসংখ্য উদাহরণ ছড়িয়ে আছে পানছড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।খাগড়াছড়ির জেলার মাননীয় সাংসদ বাবু কুজেন্দ্রলাল ত্রিপুরার কাছে ওনি একজন আস্থাভাজন ও স্নেহভাজন মানুষ।
অত্যন্ত সাধাসিধে জীবযাপন ওনার।কোনরকম অহংকার, দাম্ভিকতা, গৌরিমা আজও ওনাকে স্পর্শ করতে পারেনি। তাই তিনি পানছড়ির সমস্ত আওয়ামিলীগ, যুবলীগ,ছাত্রলীগসহ সব নেতা কর্মী এবং সকল শ্রেণির জনসাধারণের মাঝে শ্রদ্ধার ও সম্মানের একটা বিশেষ জায়গায় অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন।বিরোধী দলের অনেক মানুষও ওনার এমন সাদামাটা জীবনযাপন নিয়ে প্রশংসা করেন।এক সন্ধ্যায় পাইলট ফার্ম এলাকার সদর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেম্বার খোরশেদ আলম বলেনঃ বিজয় দা একজন অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার মানুষ।ওনি অত্যন্ত সৎ এবং ভালো মনের মানুষ।ওনার জন্য একবার আমি একটা মিথ্যা মামলা থেকে রক্ষা পাই।পাইলট ফার্ম এলাকায় আজ উন্নমনের ছোঁয়া লাগার পেছনে ওনার অনেক অবদান রয়েছে।
তিনি পেশায় একজন শিক্ষক।পানছড়ি পূজগাং মুখ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসাবে অনেক দিন ধরে শিক্ষকতা করছ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন