বন্দরে যৌতুকের দাবীতে সিজারিয়ান শিশুর মাকে শশুর বাড়ির লোকজনের হামলায় থানায় অভিযোগ
সুমন হাসান: নারায়নগঞ্জ বন্দর উপজেলার ধামগড় মনারবাড়ি এলাকায় যৌতুকের দাবীতে পাঁচ দিনের সিজার করা শিশুর মাকে যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন করে আহত করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যৌতুকলোভী শশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের স্বীকার হয়ে নবজাতক ও তার মা মৃত্যুর যন্ত্রনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ব্যাপারে পাঁচ জনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেছে সিজারিয়ান মায়ের পিতা আনোয়ার। থানা অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন মনারবাড়ি এলাকার মৃত ইয়ানুস মিয়ার পুত্র আনোয়ার হোসেনের একমাত্র কলেজ পড়ুয়া কন্যা শিমলার(১৯) সাথে দাঁসেরগাঁও এ/পি বন্দর খানবাড়ি রুহুল আমিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া নাজিম উদ্দিনের ইতালি প্রবাসী পুত্র নুরে আলমের সাথে গত এক বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাস পর স্বামী নুরে আলম স্ত্রী শিমলাকে রেখে পুনরায় ইতালি চলে যায়।শিমলার স্বামী নুরে আলম ইতালি চলে যাওয়ার পর থেকেই শশুর বাড়ির লোকজন পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে বসে। গরীব অসহায় শিমলার পিতা মাতা তাদের চাহিদা মত পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে না পারায় শশুর বাড়ির লোকজনের মাধ্যমে চলে অত্যাচার নির্যাতন। তাদের অত্যাচার নির্যাতন নিরবে সহ্য করেই শিমলা শশুর শাশুরীর সাথে মিলেমিশে দিন যাপন করতে থাকে। এদিকে শিমলা গর্ভবতী হয়ে সাময়ীক অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। এভাবে দিনের পর দিন যৌতুকের দাবীতে শশুর শাশুরীকে যখন পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে ব্যর্থ তখন শিমলাকে শারিরিক ও মানসিকভাবে জ্বালাযন্ত্রনা সহ অত্যাচার নির্যাতন করে জোড় পূর্বক বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। বাপের বাড়িতে থাকা অবস্থায় শিমলা গত ২৫/০৮/১৯ তারিখে সিজারিয়ানের মাধ্যমে পুত্র সন্তান জন্ম দেয়। যেখানে শশুর বাড়ির লোকজন এক মুহুর্তের জন্য মা ও শিশু সন্তানকে দেখতে যায়নি। কারন তাদের নাকি কন্যা সন্তান চাই। পুত্র সন্তান হওয়াতে তারা নাখোশ। এদিগে গত ২৯/০৮/১৯ইং তারিখ বিকাল আনুমানিক ৫.৩০ ঘটিকায় বিবাদী(১)আল-আমিন (২৬)পিতা-নাজিম উদ্দিন (২) নুরজাহান(৫৪) স্বামী নাজিম উদ্দিন (৩) মোসলিমা(২০) স্বামী-আল-আমিন, সর্ব সাং দাঁসেরগাঁও,এ/পি বন্দর খানবাড়ি রুহুল আমিনের বাড়ির ভাড়াটিয়া।(৪) মজিবর রহমান(৬০) পিতা কাসেম আলী (৫) আমেনা(৫৫) স্বামী কাসেম আলী, উভয় সাং উত্তর কুল চরিত্র,মুছাপুর, বন্দর, নারায়নগঞ্জ। বিবাদীগন শিমলার পিতার বাড়িতে গিয়ে আবারো পাঁচ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। বিবাদীদের দাবীকৃত যৌতুকের পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে পারবেনা বলিয়া অপরাগতা প্রকাশ করে শিমলার পরিবার। তাতে ক্ষীপ্ত হয়ে বিবাদীগন পাঁচ দিনের সিজারিয়ান শিশু জন্ম দেয়া শিমলাকে এলোপাথাড়ি ভাবে মারপিট করিয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে নীলাফুলা যখম করে। মেয়েকে রক্ষা করতে মা আসমা বেগম আগাইয়া গেলে তাকে ও মারপিট করে। ২নং বিবাদী নুরজাহান শিমলার চুল ধরিয়া টানা হেচড়া করে ও পেটে লাথি মারিয়া গুরুতর জখম করে। এবং যৌতুকের টাকা না দিলে শিমলাকে খুন করে ফেলিব বলিয়া হুমকি প্রদান করে সেখান থেকে দ্রুত চলিয়া যায়। তাদের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে মা ও শিশু সন্তানকে উদ্ধার করে বন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে বন্দর থানা অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলামের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন অভিযোগ পেয়েছি কামতাল ফাঁড়ির ইনচার্জ আনোয়ার হোসাইনকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সুস্ঠ তদন্তের পর দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন