সোনারগাঁয়ের মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ সোনারগাঁয়ের জামপুর ইউনিয়নে ভূমিদুস্যরা মরহুম কাজী হাবিবউল্লাহ ওরফে কাজী হবি নামে এক মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রবিবার রাতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী গোল চেহারুন বাদি হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে জানা যায়, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোচিত অবদান রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের উত্তর কাজীপাড়া মৌজাস্থিত মহজমপুর কাজীপাড়া গ্রামে বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী হাবিবউল্লাহ ওরফে কাজী হবির জন্য একটি পাকা বিল্ডিং নির্মাণ করে দেন। ওই বিল্ডিংয়ের পাশে আরএস ১৯২, ১৯৩ ও ১৯৪ নং দাগে ৩৯ শতক জমি মুক্তিযোদ্ধা কাজী হবির পরিবার প্রায় শত বছর ধরে টিনের ঘর ও দোকানপাঠ নির্মাণ পূর্বক ভোগদখল করে আসছে। বিগত প্রায় ৮-১০ বছর পূর্বে স্থানীয় ভূমিদস্যু তাইজুদ্দিন ভূয়া দলিলের মাধ্যমে ওই জমি সিরাজ গংয়ের কাছে বিক্রি করে দেয়। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ বিজ্ঞ সোনারগাঁ সহকারি জজ আদালতে একটি মামলা (৩১৫/২০১৪) চলমান রয়েছে। মামলা চলমান থাকার পরেও গত রবিবার দুপুর আনুমানিক ১২টার দিকে ভূমিদুস্য তাইজুদ্দিনের নেতৃত্বে সিরাজ, আয়ত আলী ও নায়েব আলীসহ অজ্ঞাত ৪০/৫০ জন সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের মারধর করে এবং ঘর ও দোকানপাঠ ভাঙচুর ও লুটপাট করে। এ ঘটনায় রবিবার রাতে মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী গোল চেহারুন বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।
এ প্রসঙ্গে জামপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ওসমান গনী বলেন, স্থানীয় ভূমিদস্যুরা দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযোদ্ধা কাজী হবির পরিবারটিকে হামলা-মামলা দিয়ে হয়রানী করছে। ৩ নভেম্বর রবিবার দুপুরে তাদের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের খরব শুনে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক সহকারি কমান্ডার মফিজুল ইসলাম খাঁন, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই ভূঁইয়া ও সোহরাব উদ্দিন ভূঁইয়া সহ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। আমরা এই ন্যাক্কারজনক ঘটনার সুষ্ঠ বিচার চাই।
মুক্তিযোদ্ধা কাজী হবির ছেলে কাজী জিয়াউর রহমান বলেন, ভুমিদস্যু তাইজুদ্দিন ও সিরাজ গং এ পর্যন্ত কয়েক দফা তাদের উপর হামলা ও বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাট করেছে। তাইজুদ্দিন নিজেকে যুবলীগ নেতা পরিচয় দেয় এবং উপজেলা আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী নেতার নাম ভাঙিয়ে এই মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের উপর ৮/১০ বছর ধরে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। গত কয়েক মাস পূর্বে সে আরেক মুক্তিযোদ্ধা ও নোয়াগাঁও ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান দেওয়ান উদ্দিন চুন্নুকেও মারধর করেছে। পরে এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের উপর তার এই হিংস্র মনোভাবই প্রমাণ করে যে সে স্বাধীনতার বিপক্ষের বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী।
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মুক্তিযোদ্ধার বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন