প্রশাসনের সরলতায় ৪ তলা বাড়ীওয়ালার কান্ড নিয়ে ইউএনও’র স্ট্যাটাস - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

বুধবার, ২২ এপ্রিল, ২০২০

প্রশাসনের সরলতায় ৪ তলা বাড়ীওয়ালার কান্ড নিয়ে ইউএনও’র স্ট্যাটাস


প্রশাসনের সরলতায় ৪ তলা বাড়ীওয়ালার কান্ড নিয়ে ইউএনও’র স্ট্যাটাস





আজকের সংবাদ ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী সনাক্ত হওয়ার পর সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুল ইসলাম। উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া এলাকার কয়েকটি বাড়ী লক ডাউন করে দেন। লক ডাউন অবস্থায় ওই এলাকার নিম্ন আয়ের অসহায় মানুষদের জন্য গোপনে প্রতিদিন খাবার সরবরাহ করতেন প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষে এক খাবার পৌঁছে দিতেন স্বেচ্ছাসেবক টিম। আর প্রশাসনের পক্ষেই স্বেচ্ছাসেবক টিম সেখানে প্রতিদিন তাদের জিজ্ঞেস করতেন তাদের অতি প্রয়োজনীয় কোন কিছু লাগবে কিনা। এ সংবাদ শুনে লকডাউনে থাকা এক চারতলা বাড়ির মালিক ও তার স্ত্রী প্রশাসনের লোক ও স্বেচ্ছাসেবীদের হাতে টাকা ছাড়াই বিশাল খাবারের তালিকা ধরিয়ে দিলেন শুধু তাই নয় তাদের পালিত গরুর ঘাস কেটে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।









করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় কাজ করতে গিয়ে সোনারগাঁও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. সাইদুল ইসলাম তার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছে সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ এ। ওনার ফেসবুকের লেখাটি আজকের সংবাদ ডটকম পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো :





আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে সোনারগাঁয়ে প্রথম করোনা সনাক্ত হয়েছিল গত ১৩ই এপ্রিল, বৈদ্যের বাজারে। সেদিন প্রশাসনিকভাবে যা যা করার তার সবটুকুই আপনাদের জন্য গভীর মমত্ববোধ ও দক্ষতার সাথে করেছিলাম আমরা। দ্রুত ডাক্তার, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ পৌঁছানো, এম্বুল্যান্স পাঠানো, রোগীকে হাসপাতালে পাঠানো,পরিবারের লোকেদের সাথে কথা বলা,প্রতিবেশীদের সাথে কথা,কোয়ারেন্টাইন ও লক ডাউন।
ঠিক তারপরদিন তার প্রতিবেশীরা ফেসবুকে গুজব ছড়িয়ে দিলো-আসলে ছেলেটির একটু ঠান্ডা লেগেছে আর কিছুই হয়নি। ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ এসে এমনিতেই ছেলেটিকে ধরে নিয়ে গেছে!! এরপর যথারীতি সবাই অসচেতন হয়ে পড়লো। (পরে গুজব ছড়ানো একজন ব্যক্তিকে জেল ও জরিমানাও করা হয়েছিলো)





সেই লক ডাউনে থাকা প্রতিবেশিদের মধ্যে যারা নিম্ম মধ্যবিত্ত ও দুস্থ, স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে নিয়মিত গোপনে আমরা তাদের বাসায় খাবার পৌঁছে দিতাম। এটা দেখে চারতলা পাঁচতলা বাড়ীওয়ালারাও আমাদের তালিকা দিতে শুরু করলো।
খুব সুন্দর তালিকাঃ
১। গরুর মাংস ৫ কেজি
২। পাবদা মাছ ১ কেজি
৩। গলদা চিংড়ি ১ কেজি
৪। রুপচাঁদা ১ কেজি
৫। লাল শাক,পাটশাক,লাউ,করল্লা
৬। সারজেল এক পাতা
৭। ডেটল এক বোতল





আমরা বাজার করে দিতে রাজী হলাম কিন্তু উনি টাকা দিতে রাজী না!! খুব রাগ করলেন উনি “টাকা দিলে তো উনিই নিজেই কিনতে পারেন আমরা কেনো!!”





একজন ভদ্র মহিলা বললেন উনার গরুটা দুতিন দিন খাস খায় না। স্বেচ্ছা সেবকটীমকে উনি ঘাস কেটে আনতে বললেন!! গরুর জন্য অন্য খাবার তিনি নিবেন না!!





প্রতিবেশীদের সেদিনের ফেসবুক গুজব আর কোয়ারেন্টাইন না মানা আমাদের কত বড় ক্ষতি করেছে ফলাফলটা দেখুনঃ
আমাদের মোট ১১ জন করোনা আক্রান্তের ৪ জনই বৈদ্যের বাজারের!!





ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেদের দিয়ে সুযোগ বুঝে গরুর কাটা ভদ্র মহিলার এই অদ্ভুত খায়েশ…লক্ষ কোটি টাকা জমিয়ে রেখে সুযোগবুঝে বাজার করিয়ে নেয়া।
নিজেদের সব জ্ঞান ফেসবুকে ঢেলে দিয়ে মার্কজুগারবার্গকে কাঁচকলা দেখিয়ে মুচকি হাসা-“তুই দেখ আমি কে!!” আমাদের এইসব প্রবণতার জন্যই কিনা জানি না রবীন্দ্রনাথ দুঃখভরে লিখে গিয়েছিলেন-





“সাত কোটি বাঙ্গালীর হে মুগ্ধ জননী,
রেখেছো বাঙ্গালী করে, মানুষ করনি”





পুনশ্চঃ
তবুও তোমাকেই ভালোবাসি সোনারগাঁ,
তবুও তোমাকেই ভালোবাসি প্রিয় বাংলাদেশ।





লেখকঃ মো. সাইদুল ইসলাম
উপজেলা নির্বাহী অফিসার
সোনারগাঁও।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭