বেঁচে ফিরলে আবারো নামবো মানুষের সেবায়: সোনারগাঁয়ে করোনা আক্রান্ত স্বেচ্ছাসেবী
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করতে গিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন এক তরুণ। করোনাভাইরাসের ভয়াবহতার বিষয়ে জনগণকে সচেতন, অসহায় মানুষের মাঝে উপজেলা প্রশাসনের হয়ে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করার কাজে নিয়োজিত থাকার মধ্যে আক্রান্ত তিনি।
গত বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) দিনে জ্বর, ঠান্ডা ও কাশি দেখা দিলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ল্যাবে পাঠানো হলে আজ তার রিপোর্ট আসলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা পলাশ কুমার সাহা জানান, ওই তরুণের করোনা পজিটিভ। ২৩ তারিখের ২৬ টি নমুনার মধ্যে ১৮ টির ফলাফল পাওয়া গেছে। যার মধ্যে ৭টি কোভিড-১৯ পজেটিভ এবং ১১টি নেগেটিভ। আর ৭ জনের মধ্যে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের একজন স্বেচ্ছাসেবী রয়েছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে উপজেলার অসহায় ও দুস্ত মানুষকে সচেতন ও তাদের ত্রান সহায়তা দিতে একজন স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নাম লিখিয়েছিলেন বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের মনারবাগের মোঃ এরশাদ আলীর একমাত্র সন্তান অমিত হাসান মিরাজ। নিজেকে মানবিক কাজে নিয়োজিত করেছিলেন অনেক আগেই। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করে এমন বেশ কয়েকটি সংগঠনের সাথে যুক্ত রয়েছেন তিনি। বর্তমানে ব্লাড ফর নারায়ণগঞ্জ নামে একটি স্বেচ্ছায়, বিনামূল্যে রক্তদাতাদের সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। অমিত স্বেচ্ছাসেবী কাজের সাথে যুক্ত থেকেই কোভিড-১৯ বা করোনা পজিটিভ হয়েছেন।
এ খবর সোনারগাঁও উপজেলায় ছড়িয়ে পড়লে অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলেও তিনি হতাশ নন। হাল ছাড়বেন না। করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখারও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।
১৮ ই মার্চের পর থেকেই উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় জীবাণুনাশক ছেটানোর মেশিন, পিপিই, হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক বিতরণ ও সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে নামেন উপজেলার প্রায় ৫ শত স্বেচ্ছাসেবী। সুবিধাবঞ্চিত মানুষের দিকে সেবার হাত বাড়িয়ে দেন। রাস্তাঘাট, বাসাবাড়ি, অফিস, মসজিদ, মন্দির, রাস্তায় চলমান গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন যানবাহন জীবাণুমুক্ত করতে থাকে স্বেচ্ছাসেবক দলটি। তাঁদের এই উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রশংসা পায়।
তবে তাদের মধ্যে একজন সহযোদ্ধা করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়লে অন্য স্বেচ্ছাসেবকদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দেয়। তবে তারা হতাশ নন বলে জানান। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ওই তরুণ অমিত হাসান সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নে নিজ বাসায় অবস্থান করছেন জানিয়ে বলেন, ‘যদি বেঁচে ফিরি, দেখা হবে। আবার নামব রাস্তায়, অসহায় মানুষের সেবায়, কথা দিলাম।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা সুরক্ষিত রাখতে এবং অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষের পাশে থাকতে স্বেচ্ছাসেবীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে তারা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন। আমরা করোনায় আক্রান্ত ওই তরুণের পাশে আছি, নিয়মিত তার খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন