সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতালে গলাকাটা ফিতে জোরপুর্বক সিজার ও অসৌজন্যমুলক আচরণের অভিযোগ
শাহ জালাল, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) : সোনারগাঁয়ে প্রসুতির ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিজার, অতিরিক্ত ফি অাদায় ও অপারেশনে ত্রুটি থাকায় পরবর্তীর্তে ইনফেকশন হলেও রোগী ও স্বজনদের সাথে অসৌজন্যমুলক অাচরণের অভিযোগ উঠেছে সেন্ট্রাল সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতাল নামে এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।
মোগড়াপাড়া চৌড়াস্তার হাবিপুর এলাকায় ওই ক্লিনিকে গত এপ্রিল মাসের ৮ তারিখে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন সোনারগাঁ সাদিপুর ইউনিয়নের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর রহিমের স্ত্রী লাকী আক্তার। লাকী ও তার পরিবার নরমাল ডেলিভারির জন্য আগ্রহী হলেও হাসপাতালের ডিউটিরত নার্স, রিসিপশনিষ্ট ও সংস্লিষ্ট কয়েকজন নানাভাবে তাদের ফুসলিয়ে সিজার করাতে বাধ্য করেন। ভুক্তভোগী লাকী আক্তার বলেন, যেদিন ভর্তি হই,আমাদের ইচ্ছা ছিল নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করবো।
কিন্তু হাসপাতালের লোকজন আমাদের এই বলে ভয় দেখানো শুরু করে যে, লক ডাউনের সময় যখন তখন ডাক্তার পাবেন না, এই ডাক্তার চলে গেলে বিপদে পড়বেন। রাতে যদি ব্যথা উঠে তখন বিপদ হবে। তাদের কথায় ভীত হয়ে অামরা সিজারের জন্য রাজী হই। পরে ওই দিন রাতেই ৮ টায় সিজার করা হয়। অথচ অন্য যেকোন হাসপাতালে গেলে ২/১ দিন অবজারবেশনে রাখে কিন্তু তারা তাড়াহুড়া করে আমার সিজার করে।
লাকী বলেন, আবার ২ দিনের মধ্যে ডিসচার্জও করে দেয়। এসময় হাসপাতাল থেকে সামান্য নাপা প্যারাসিটামল ছাড়া অন্যকোন ঔষদ দেয় নাই। অথব প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো বিল করে। বাসায় আসার দুইদিন পর থেকেই আমার সেলাইয়ের জায়গায় আবার ব্যাথা হয় এবং জ্বর আসে। তখন থেকে অনবরত হাসপাতালের নাম্বারে ফোন দিয়ে যাই কেউ ফোন রিসিভ করেনা। চারদিন পর ফোন রিসিভ করলে বলে হাসপাতাল বন্ধ ছিল। তাই ফোন ধরেনি। জ্বর ব্যাথার জন্য নাপা খেতে বলে, এরপরেও না সারায় ১০ দিনের মাথায় ১৮ এপ্রিল হাসপাতালে যাই ড্রেসিং করি। কিন্তু তখন দেখা গেলো যে সেলাই ছুটে গেছে এবং ভেতরে ইনফেকশন দেখা দিছে।
এক প্রশ্নর জবাবে লাকী অাক্তার দাবি করেন কোন প্রসূতি বোন যেন আমার মতো কষ্ট না পায় ও আমরা গরিব অসহায় মানুষ আমার জীবনের যা ক্ষতি হওয়ার হইছে। আমি তাদের বিচার চাই না। আমার টাকা ফেরত দিলেই হবে। আমার স্বামী ৭ হাজার টাকা বেতনে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে। আমাদের অনেক কষ্টের টাকা।
লাকী আক্তারে মায়ের বক্তব্য, শুরু থেকেই হাসপাতালে লোকজন আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে।এরপর আমরা মদনপুরে অন্য একটি হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় আমার মেয়ের সেলাই করি এবং নিয়মিত ড্রেসিং করি।
তিনি বলেন,দুই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে আমার প্রায় ৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে। পরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের লোকদের সাথে যোগাযোগ করলে তখনও তারা আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে। হাসপাতালের ভুলের কারনে আমার মেয়েকে এতদিন কষ্ট করতে হলো,আমরা গরিব মানুষ আমাদের এতগুলা টাকা নষ্ট হয়ে গেলো আমরা এর ক্ষতিপুরণ চাই।
এব্যাপারে সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক শিউলী আক্তারের সঙ্গে সরাসরি ও টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতালের এডমিন পরিচয় দানকারী ইব্রাহীম ভুক্তভোগী লাকী আক্তারের অভিযোগ অস্বীকার করেন।তিনি বলেন,লাকি আক্তার নিয়মিত ঔষধ সেবন না করায় ও নিয়ম মেনে না চলায় তার শেলাইয়ের যায়গায় ইনফেকশন হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন