সোনারগাঁয়ে মেডিকেল অফিসারের অবহেলায় মৃত্যুর অভিযোগ
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের এক মেডিকেল অফিসারের অবহেলায় লিপি আক্তার (৩৫) নামে সেবাগ্রহিতার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘমেয়াদী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণের পর শারীরিক সমস্যায় মৃৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে এক সপ্তাহ আগেও জীবন বাঁচানোর আকুতি জানিয়ে শরীর থেকে পদ্ধতি পরিবার পরিকল্পনার এই ডাক্তার খুলে দেয়ার অনুরোধ করেছিলেন ডাক্তারের কাছে। দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দিলে রোগীর মৃত্যু হয়। ডা. রব ছাড়াও এসএসিএমও আসমা বেগমের কাছে সেবা নিতে গিয়ে প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন অনেকে। উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউপির গাবতলী এলাকায় তথ্য সংগ্রহে গেলে ভুক্তভোগী নাজমা, রুপা, মাধবী, আয়েশা আক্তার ও এলাকাবাসী জানান, কৃষক মজিবুর রহমানের ২য় স্ত্রী লিপি আক্তার গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোনারগাঁ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. আব্দুর রবের কাছে গিয়ে দীর্ঘ মেয়াদী (৩ বছর) জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি (ইমপ্লান্ট) গ্রহণ করেন।
ইমপ্লান্ট নেয়ার ৫ মাসের মাথায় জুলাই মাসে তার শরীর ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি রক্তক্ষরণ শুরু হয়। লিপি আক্তার ডা. আ.রবের কাছে গিয়ে বিষয়টি জানিয়ে শরীর থেকে ইমপ্লান্ট পদ্ধতি খুলে দিতে বলেন। তিনি বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে তাকে সকাল বিকেল সুখী পিল সেবন করতে বলে বিদায় করেন। ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক পিল সেবন করাকালীন সময়েও তার শারীরিক সমস্যা না কমে আরও বাড়তে থাকলে তিনি এক সপ্তাহ পর আবারও ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি তাকে ধমকিয়ে বিদায় করে দেন। এভাবে তিনি ৪-৫ বার গেলেও ডা. রব তার সমস্যার কথার কর্ণপাত না করে ইমপ্লান্ট পদ্ধতি না খুলে দুর্ব্যবহার করে তাড়িয়ে দেন। এদিকে গরিব এই ভুক্তভোগীর শরীরে পানি জমে ফুলতে থাকে ও অনবরত রক্তক্ষরণের অসহ্য যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বৈদ্যেরবাজার ইউপির ক ইউনিটের পরিবার কল্যাণ সহকারী সুুফিয়া আক্তারের কাছে যান। তিনি তাকে আবারও ডা. রবের কাছে নিয়ে ইমপ্লান্ট খুলে দেয়ার অনুরোধ করলে এটা খোলা তার জন্য ডিসক্রেডিট বলে তাড়িয়ে দেন। পরে ভুক্তভোগী বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নীর কাছেও কয়েকবার গেলে তিনিও দুর্র্ব্যবহার করেন। এমনভাবে দীর্ঘ এক মাসেরও অধিক সময় ধরে রক্তক্ষরণের ফলে গত আগস্ট মাসের ২২ তারিখ মারা যান ।
শুধু গাবতলীর নয় ভিটিপাড়ার হোসনে আরা, লাধুরচরের তানিয়া আক্তার, শেখকান্দীর জোসনা আক্তার, নোয়াগাঁওয়ের সুমাইয়া, টিপরদীর রিয়া আক্তারসহ আরও অনেক ভুক্তভোগী রয়েছেন যারা ডা. রবের কাছ থেকে ইমপ্লান্ট পড়ার পর সমস্যা দেখা দিলে নিয়ম থাকলেও তা খুলে দেননি।
বাধ্য হয়ে তারা অন্য ডাক্তারের কাছে ভিজিট দিয়ে তা খুলিয়েছেন। ডা. আ. রব হয়রানির বিষয়টি নিয়মের ওপর চাঁপানোর অপকৌশল করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে জানান, যদি এমন হয়েও থাকে ভবিষ্যতে বিষয়টি খেয়াল রাখবো। অপরদিকে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার (এসএসিএমও) আসমা বেগম মুন্নী, তিনিও নিয়মের অজুহাত দেখান। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম জানান, অভিযোগটি জেলা অফিসারকে জানাবো। সদ্য পদোন্নতি পাওয়া পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলা উপ-পরিচালক সারোয়ার আলম জানান, বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন