রূপগঞ্জের সড়কে ভোগান্তির আরেক নাম ড্রেজারের পাইপ, বিপর্যয়ের মুখে রয়েছে এলাকাবাসী
রূপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ রূপগঞ্জের ভোলাব ইউনিয়ন থেকে শুরু করে কায়েতপাড়া পর্যন্ত রাস্তায় ভোগান্তির আরেক নাম হয়ে দাড়িয়েছে ড্রেজারের বালির পাইপ। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা যায় উপজেলার সর্ব উত্তরে ভোলাব ইউনিয়নের শেষের দিকে বিভিন্ন আবাসন প্রতিষ্ঠানের বালি ভরার পাইপ যেন জনগনের গলার কাটা হয়ে দাড়িয়েছে। শুধু ভোলাবো নয় কাঞ্চন, গোলাকান্দাইল, ভূলতা, মুড়াপাড়া, তারাবো, কায়েতপাড়া রূপগঞ্জ সদর ইউনিয়নসহ কোথাও বাকী নেই যেখানে পাইপের দ্বারা ভোগান্তিতে নেই সাধারন জনগন। সাড়ি সাড়ি করে ৭/৮ টি পাইপ রাস্তা পার করায় তৈরী হয়েছে প্রতিবন্ধকতা, সেই সাথে কিছু কিছু জায়গায় মাটি দিয়ে ৩/৪ফুট উচু করার কারনে প্রায়ই ঘটছে গাড়ির দূর্ঘটনা। ছোট ছোট বেটারী চালীত অটোরিক্সা পাঁচ ছয়জন যাত্রী নিয়ে পার হতে হিমশিয় খায় । শুধু তাই নয় বৃষ্টির মৌসুম আসলেই পাইপের উপরে দেয়া মাটি সরে গিয়ে পাইপ পিচ্ছিল হয়ে থাকে এতে ছোট ছোট গাড়ি প্রায়ই দূর্ঘটনার সম্মুখিন হয়। সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়ে বাই সাইকেল ও মোটর সাইকেল চালকেরা।
রূপগঞ্জ ইউনিয়ন পাড় হলেই তারাবো ইউনিয়ন। তারাবো ইউনিয়নের ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে বসানো হয়েছে প্রায় ৫০ টি বালির ড্রেজারের পাইপ। আর এসব নিয়ন্ত্রন করছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি। একই চিত্র কাঞ্চন পৌরসভা ও রূপগঞ্জ ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায়। তবে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় এই যে, রাস্তার উপর দিয়ে শুধু পাইপ বসিয়েছে তা নয় রাস্তার নিচের মাটি সরিয়েও বসানো হচ্ছে সারি সারি ড্রেজারের পাইপ। রাস্তায় অতিরিক্ত বোঝাই কোন ট্রাক চলাচল করলে যে কোন সময় রাস্তা ভেঙে যেতে পারে বলেও আসঙ্কা স্থানীয়দের । শুধু তাই নয় সাড়ি সাড়ি এসব পাইপ বসাতে অনেক কৃষকের জমির উপরের বাসের খুটি ব্যবহার করে নেয়া হচ্ছে পাইপ। কেউ ভূমি দস্যুদের ভয়ে মুখ খুলেও কিছু বলেনা। কাঞ্চন পৌরসভার গেটের সামনে চন্ডিতলা মন্দিরের প্রধান গেটের সামনে বসানো হয়েছে তিনটি মোটা পাইপ। সকাল বিকাল পুজো করতে আসা বয়স্ক অনেকের ভোগান্তির কারন এই ড্রেজারের বালির পাইপ। পাইপ পার হবার জন্য নেই কোন ভাল ব্যবস্থা। বয়স্ক লোকজন প্রায়ই পাইপ পার হতে পরে যায় বলে অভিযোগ করেন মন্দিরের পুরোহিত। শ্রী রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন পুজো করতে আসা শুধু বয়স্ক লোকই নয়,মহিলারা বেশি সমস্যায় পরে মন্দিরে আসতে। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে স্থানীয় যারা এই ব্যবসার সাথে জড়িতে তাদের বিরুদ্ধে কেউই মুখ খুলতে রাজী নন বলে জানান তিনি।
উপজেলা সূত্রে খোজ নিয়ে জানা যায়, এসব ড্রেজারের পাইপ মহাসড়ক পার করতে উপজেলা কোষাগারে রাস্তার উন্নয়ন ফি জমা দিয়ে পাইপ বসানোর কথা ও প্রতি বছর তা রিনিউ করতে হয়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে একবার পাইপ বসিয়ে কোন ফি না দিয়েই চালিয়ে যাচ্ছে তাদের অবৈধ ব্যবসা। তাছাড়া একটির অনুমোদন নিয়ে পাইপ বসানো হচ্ছে তিন থেকে চারটি।
এ ব্যাপারে ড্রেজার পাইপ মালিকদের সাথে কথা বললে তারা জানায়, তারা স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমোতি নিয়ে এসব পাইপ বসিয়েছে। তবে পাইপের উপর মাটি দিয়ে পারাপারের ব্যবস্থা করে দিবে বলে আস্বাস দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ নুসরাত বলেন, আমাদের উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ব্যবস্থা নিচ্ছি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই এই ড্রেজারের পাইপ অপসারনের ব্যাপারে উদ্যাগ নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন