রূপগঞ্জে সাংবাদিক রিয়াজকে হত্যাচেষ্টায় মামলা
মোঃ মোয়াশেল ভূঁইয়াঃ-নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ পত্রিকার সাংবাদিক রিয়াজ হোসেনকে হত্যাচেষ্টার মিশনে ছিল ৫ জন। রিয়াজকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করার পরে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে রিয়াজ। পরে রিয়াজ অচেতন হয়ে পড়লে তাকে মৃত মনে করে হত্যা চেষ্টাকারী সন্ত্রাসীরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। কিছুক্ষণ পরে রিয়াজের জ্ঞান ফিরলে সে তার ছোট ভাইয়ের মুঠোফোনে কল করলে স্বজনরা ছুটে এসে রিয়াজকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
এই পরিকল্পতি হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িত প্রত্যেকে ছিল ভাড়াটে সন্ত্রাসী। সম্প্রতি রিয়াজ স্থানীয় প্রভাবশালীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের রিপোর্ট করে তাদের বিরাগভাজন হন। এই হামলার ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে রিয়াজের ভাই তাইজুল ইসলাম বাদি হয়ে রূপগঞ্জ থানায় অজ্ঞাত সেই ৫ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
মামলার আবেদনে তাইজুল উলেখ্য করেন, গত ২১ জুন রিয়াজ হোসেন তার সহকর্মী দৈনিক মানবজমিনের সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন জয়, তার বন্ধু মাসুদ চৌধুরী ও জামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে একটি প্রাইভেটকার যোগে ঢাকায় গিয়েছিল। পরে ২২ জুন রাত ১২টা ৫ মিনিটের দিকে রিয়াজকে তার বন্ধুরা বাড়ির অদ‚রে কাঞ্চন বাজারে জনৈক সানাউলাহ মান্নান সানির ডিস অফিসের সামনের রাস্তায় নামিয়ে দেয়। সেখান থেকে রিয়াজ পায়ে হেটে নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলে কাঞ্চন খাপাড়া এলাকার জনৈক নায়েব আলীর বাউন্ডারীর সামনে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জন সন্ত্রাসী রিয়াজকে আটকে এলোপাথারী মারধর করতে থাকে।
এসময় এক সন্ত্রাসী তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রিয়াজকে খুন করার উদ্দেশ্যে রিয়াজের মাথায় সজোরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। এতে রিয়াজ মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। রিয়াজ অচেতন হয়ে পড়লে সন্ত্রাসীরা রিয়াজকে মৃত ভেবে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। প্রায় ১৫ মিনিট পরে রিয়াজের জ্ঞান ফিরলে সে তার ছোট ভাইয়ের মুঠোফোনে কল করে ঘটনাটি জানালে স্বজনরা এসে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে রূপগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রিয়াজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। স্বজনরা তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলেও রিয়াজের অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে দ্রুত কর্ণগোপ এলাকার ইউএসবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক তাকে দ্রুত আইসিইউতে ভর্তির নির্দেশ দেন। বর্তমানে রিয়াজ ইউএসবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তাইজুলের ধারণা স্থানীয় প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সন্ত্রাসীরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে রিয়াজকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আইসিইউ থেকে সাংবাদিক রিয়াজকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে। বর্তমানে সে শঙ্কামুক্ত বলে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক প্রফেসর কিংসুক আবির।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, সাংবাদিক রিয়াজ হোসেনকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় মামলা নিয়মিত মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে তৎপর রয়েছে। ইতিমধ্যে তথ্যপ্রযুক্তির সহযোগিতাও নেওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই হত্যাচেষ্টাকারী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করা হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন