আক্রান্ত সাংবাদিকের আর্তনাদ
স্টাফ রিপোর্টার:-অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় সেই ১৯৯৮ সাল থেকেই একের পর এক পুরস্কার অর্জনকারী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সিনিয়র রিপোর্টার সাঈদুর রহমান রিমন পাঠকপ্রিয়তায় আজও শীর্ষ সারিতেই রয়েছেন। জাতীয় পর্যায়ে হৈচৈ সৃষ্টিকারী অসংখ্য অমিমাংসিত কাহিনীর নেপথ্য রহস্য উদঘাটন করে তিনি বারবারই তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। চলতি ঘটনাবলীর সঙ্গে মাঠ পর্যায়ে তৎপর থাকার মাধ্যমে এতো দীর্ঘ সময় ধরে জনপ্রিয়তা উত্তরোত্তর বাড়িয়ে চলা রিপোর্টারের সংখ্যা হাতে গোণা কয়েকজনের মধ্যেও তিনি অন্যতম। বাংলাদেশ সীমান্তে উলফা, এনডিএফবি, আচিক ফ্রন্টের সশস্ত্র ঘাটিসমূহ আবিস্কার, বন পাহাড়ের বিপন্ন মানবতার হৃদয় কাপানো নানা তথ্যাদি উদঘাটন, ৭৫ এর ১৫ আগষ্ট জাতির জনক শখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে গড়ে তোলা বীরত্বপূর্ণ প্রতিরোধযুদ্ধের অজানা ইতিহাস উন্মোচন,ইবএনপি নেতা ইলিয়াস গুমের নেপথ্য কাহিনী এমনকি সর্বশেষ টেকনাফে মেজর সিনহা হত্যাকান্ডের সাড়া জাগানো তথ্য উদঘাটনের মাধ্যমে সকল শ্রেণীর পাঠকদের মন জয় করে নিয়েছেন। দেশ ও মানুষের কল্যাণে বারবার নিজের জীবনকে বিপন্ন করে অনণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী প্রথিতযশা সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমন বর্তমানে সংঘবদ্ধ চক্রের সীমাহীন আক্রোশে আক্রান্ত হয়েছেন। মাত্র ক’দিন আগেই তার বিরুদ্ধে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ৫০০ কোটি টাকার মানহানি মামলা দায়ের করলেন। এ নিয়ে বাদ, প্রতিবাদ, মানববন্ধনে উত্তাল হয়ে উঠে সারাদেশ। ঠিক একইসময়ে কতিপয় নামধারী অপসাংবাদিক ও চিহ্নিত অপরাধী মিলেমিশে সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমনের জীবনকে বিপন্নদশায় ঠেলে দিয়েছেন। তথাকথিত ঢাকা মহানগর প্রেসক্লাব, মিরপুর প্রেসক্লাব, সাংবাদিক জোট ইত্যকার ব্যানারের আড়ালে গড়ে ওঠা পেশাদার অপরাধীদের ভাড়ায় খাটিয়ে প্রভাবশালী চক্র রিমনকে নিশ্চিহ্ন করার ফায়দা লুটতে চাইছেন। সাংবাদিক সাঈদুর রহমান রিমনের ফেসবুক ওয়ালে লেখা “আক্রান্ত সাংবাদিকের আর্তনাদ” শীর্ষক লেখাটি হুবুহু তুলে ধরা হলো।)
ব্যাথানাশক ওষুধপথ্য নার্ভগুলোকে এতটাই দুর্বল করে দেয় যে, দেহ মন থেকে ঘুমের আবেশ যেন কাটাতেই চায় না। গত সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে ঘুম থেকে উঠেই ডাইনিং পেরিয়ে রিডিং রুমে যাবার সময় আচমকা যেন সম্বিত হারিয়ে ফেলি। ধারণা হলো, অতি ক্ষমতাধারী কারোর জোরসে ধাক্কায় দেয়ালে ছিটকে পড়লাম, সেখান থেকে জুবুথুবু অবস্থায় মেঝেতে। ফলে ডান পায়ের হাটু কিছুটা ডিসপ্লেস মনে হলো, মুচরে গেল পায়ের চারটা আঙ্গুল। পরে অনুভব করলাম কাধসহ পিঠের অংশেও ভয়ানক আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছি আমি। ফলে উচ্চক্ষমতার ব্যাথানাশক ওষুধ সেবনের মাধ্যমে যন্ত্রণা লাঘব করতে গিয়ে আটকে পড়লাম ঘুমের ফাঁদে। আর এ অসুস্থতাজনিত শয্যাশায়ী থাকাকেই মোক্ষম সুযোগ হিসেবে বেছে নিলো সংঘবদ্ধ চক্র। কারা কারা মিলে এ চক্র? চার বছর আগে বাংলাদেশ প্রতিদিনে একাধিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে বাড্ডার পিন্টুর নেতৃত্বে গড়ে ওঠা বহুমুখী এক প্রতারক চক্রকে তছনছ করে দিয়েছিলাম…সেই চক্রের মূল হোতা পিন্টু।
পল্লবী থানার ভেতরে বোমা বিস্ফোরণসহ জঙ্গি নাটক সাজানোর মূল হোতা, ঢাকা উত্তর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাইজুল ইসলাম চৌধুরী বাপ্পী ও অপরাধ সহযোগী বলে কথিত দালাল সাংবাদিক। কারণ আমার রিপোটের কারণেই ওই ঘটনায় মিরপুরের ডিসি, এডিসি, ইন্সপেক্টর, অফিসার্ন ইনচার্জ ও দুই এসআইকে স্ট্যান্ডরিলিজ করা হলেও অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে এখনো বাপ্পী রয়েছেন বহাল তবিয়তে। হুইল সাবানের মেগা কার্টন বোঝাই চকচকে নোট পৌঁছে দিয়েও শুধু আমার নজরদারির কারণে নিজেকে আজও অভিযোগমুক্ত করাতে পারছেন না। দন্ডমুন্ডের কর্তা বলে দিয়েছেন, কার্টন থাকুক, কিন্তু ওই সাংবাদিকটার দৃষ্টি এদিক থেকে না সরানো গেলে আমি তোমাকে ধোয়া তুলশী পাতা বানাতে পারবো না। এ কারণে দালাল সাংবাদিককে সঙ্গে নিয়ে প্রথমেই তিনি অভিযোগ করেছিলেন বাংলাদেশ প্রতিদিনে, চেষ্টা করেছিলেন মিরপুরের দিকে যেন আমার পা ফেলা নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু পুচকে অপরাধীর ধারণাও নেই যে, সাঈদুর রহমান রিমন এদেশে পেশাদার জাদরেল সম্পাদক নঈম নিজামের টিম মেম্বার। তিনি শুধু চাকরিদাতা সম্পাদক নন, প্রতিটি কর্মির পিতৃতুল্য অভিভাবক। কর্মিদের প্রতি অসীম বিশ্বাস নিয়েও তাদের প্রতিটি কদম তিনি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। নঈম নিজাম দরবেশ কিংবা সাই বাবা নন, কিন্তু তার সৈনিকেরা কে কী বলতে চায় নিজেই তা আগাম বলে দেন। সেখানে রিমনের চলাফেরা বন্ধুর পথে, আরো বেশি বাঁকা। সভাবতই আমার কদমে আরো বেশি নজরদারির কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।
পল্লবীর শীর্ষ অপরাধ জুটির মিশন ব্যর্থ হওয়ার পর থেকেই রিমনকে সরাসরি সাইজ করতে দিনের পর দিন ওৎ পেতে আছেন। এরইমধ্যে চক্রটি সীমাহীন নোংরা খেলায় মেতে উঠেছেন, ফেসবুকের পাতায় পাতায় নানা নামের আইডি খুলে কল্পিত নানা অভিযোগ তুলে আমার ৩২ বছরের সাংবাদিকতাকে চ্যালেঞ্জ জানানোর চেষ্টায় লিপ্ত। এখন পর্যন্ত তাদের কারো লেখনিতে দুইটি, আবার কারো লেখনিতে তিনটি পর্যন্ত বউ আবিস্কার করার চেষ্টা করছেন, তাছাড়া অসংখ্য বান্ধবীর সন্ধানেও গলদঘর্ম অবস্থা তাদের। নারীঘটিত রসকসের লেখনি ছাড়া অন্য কোনো নিউজের কথা ভাবতেও পারেন না তারা। ভাড়াটে লেখক দ্বারা একেক সময় একেক ধরনের এমনকি পরস্পর বিরোধী নানা পোস্ট দিয়ে তা পাঠকদের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন তারা।
গোল্ড স্মাগলারদের নামধাম, পরিচয় তুলে ধরে পর পর কয়েকটি লিড রিপোর্ট করার পর চরমভাবে বিপাকে পড়ার কথাটি বারবার মনে পড়ছে। ওই সময় গোল্ড স্মাগলাররা মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যে আমার নয় জন স্ত্রী সাজিয়ে বাসার গেট পর্যন্ত পাঠিয়েছিল। তারা প্রকাশ্যেই ঘুরে ঘুরে কাবিননামা দেখাতো, আমার বাসায় ফোন করে এক স্ত্রী আরেক স্ত্রীকে ঘরে তুলে নেয়র সুপারিশ পর্যন্ত করতো। তারও আগে ৩৭ এমপি’র দূর্নীতি লুটপাটের নানা কাহিনী প্রকাশ করে তাদের মধ্যকার ৩১ জনই জোট বেধে দফায় দফায় মিটিং করে আমাকে চরম শিক্ষা দেয়ার প্রস্তুতি নেন। তবুও তো বেঁচে আছি এখনও, তবুও তো পথ চলি পায়ে হেটে, গন্তব্যে যাতায়াত করি লোকাল বাসে চড়েই। এই বেশ ভাল আছি।
মিরপুরের অপরাধী নেতা ও কথিত সাংবাদিক চক্রের সঙ্গেই যুক্ত হয় যশোর কেশবপুর এলাকার এক চরমপন্থী। নানা কায়দা কৌশল খাটিয়ে, পা ছুঁয়ে কান্নাকাটির মাধ্যমে আমার রিপোর্টার্স টিমে ইন করেছিল ছেলেটি। কিন্তু আমার টিম সদস্যদের ছায়ার মতো অনুসরণকারী গ্রুপ সদস্যরা মাত্র ৩৭ দিনের মধ্যেই হাত, পা লম্বা, বিশাল বপু মার্কার ওই মনিকে চরম বেয়াদব, অপরাধপ্রবণ, দুর্বৃত্তপনায় সিদ্ধহস্ত ও চোগলখোর মার্কার ছ্যাচড়া চাঁদাবাজ হিসেবে চিহ্নিত করে। ফলে শৃঙ্খলাপূর্ণ ঐতিহ্য রক্ষার্থে তৎক্ষনাত তাকে রিপোর্টার্স টিম থেকে রিমুভ করতে বাধ্য হই। তবু মুখে মৃদু হাসি ফুটিয়েই তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে দুঃখের সঙ্গে বিদায় দিয়েছি।
তার সঙ্গেই ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চার মতো না বুঝেশুনেই সাঙ্গাত বাধে মানসিক প্রতিবন্ধী আরেক ভূয়া ইঞ্জিনীয়ার। বিদ্যুত বিভাগের ওই ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী বিভিন্ন প্রতারক প্রতিষ্ঠানের কাছে তার দাবি অনুযায়ী বিভিন্ন কাজের বিল বাবদ প্রায় এক কোটি টাকা পান, কিন্তু বছরের পর বছর ধরেও সেসব টাকা আদায় করতে না পেরে চরম নিঃস্ব হয়ে পড়েন তিনি। অর্থাভাবে সত্যি সত্যিই তার পরিবারের বেহাল অবস্থা দেখে সিসিসি নামক একটা প্রতিষ্ঠানে ফোন করে দেই আমি। নিজের পরিচয় দিয়ে ঠিকাদার মোহাম্মদ আলীর পাওনা টাকা মানবিক কারণে হলেও পরিশোধের বিনয়ী অনুরোধ করি। তারা এক সপ্তাহের মধ্যে বিপদগ্রস্ত মোহাম্মদ আলীকে ডেকে নিয়ে ঋণ পরিশোধ করে দেন। আলী অবশ্য বেশ কয়েকদিন পর স্বীকার করে আমাকে জানান, তারা মাত্র সাড়ে ছয় লাখ টাকা পরিশোধ করেছে। একইভাবে দুই দিন সময় নিয়ে শেরপুর জেলার নকলা এলাকায় এক প্রতারকের কাছে পাওনা লক্ষাধিক টাকাও তার অনুকুলে পাওয়ার ব্যবস্থা করি। কিন্তু পরবর্তীতে পেশাগত কারণেই খুব বেশি সময় তাকে দিতে পারিনি, এ কারণে তার অন্যান্য পাওনাদারের কাছে টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানানো সম্ভব হয়নি। এতেই মহাক্ষিপ্ত হয়ে মিরপুর সিন্ডিকেটের সঙ্গে তিনিও জোট বেধেছেন এবং সবচেয়ে জঘণ্য ভাষায় একের পর এক নোংরা টাইপের পোস্ট দিয়েই চলছেন। সংঘবদ্ধ চক্রটির প্রধান হোতা আড়ালে আবডালে থাকলেও প্রকাশ্য নেতৃত্ব দিয়ে চলছে ধান্ধাবাজ গিট্টু জহির। অপসাংবাদিকদের সঙ্গে নিয়ে নানা নামে হরেক বর্ণের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে সাংবাদিক নেতা সাজা জহির মূলত জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতা ও পরবর্তীতে যুবদলের ক্যাডার হিসেবে সমগ্র মিরপুর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে বেড়ান। তাদের সাতকাহন প্রস্তুত হয়েছে।
যারা মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই আমার ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছেন এবং পেশাগত জীবনকেও বিচ্ছিন্ন করার অপকর্মে জড়িয়ে আছেন, কেন করছেন সেসব কাহিনীও উদঘাটন করেছি আমি। মূলধারার ঈর্ষাপরায়ন কতিপয় সাংবাদিকের সক্রিয় সমর্থন, সহায়তাও রয়েছে পেছনে। যে কারণে ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের সিনিয়র সদস্য হওয়া সত্তেও আমার প্রতি বিন্দুমাত্র সহমর্মিতা মেলেনি এখনও, পুলিশও করছে পক্ষপাতিত্বের আচরণ। ধারাবাহিকভাবেই প্রকাশ করতে চাই সবকিছু।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন