মানবিকতার অনন্য নজির গড়লেন বন্দরের ইউএনও শুক্লা সরকার
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ নারায়নগঞ্জের বন্দর উপজেলায় শুধুমাত্র ভোটার আইডির ভুলের কারণে ৬ বছর ধরে প্রয়াত এক স্কুল শিক্ষকের স্ত্রী তার স্বামীর পেনশনের টাকা উত্তোলন করতে না পেরে রাস্তায় ভিক্ষা করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের মাধ্যমে এ খবর পাওয়া মাত্র বন্দরের ইউএনও শুক্লা সরকার ওই অসহায় নারী মায়া বেগমকে তার কার্যালয়ে বুধবার সকালে ডেকে আনেন।
সংশ্লিষ্ট সব দফতরে নিজে যোগাযোগ করে বিধবা ওই নারীর সমস্যা দ্রুত সমাধান করে পেনশন পাওয়ার বাধা দূর করার তাগিদ দেন।
শুধু তাই নয়, স্কুল শিক্ষকের কোন সন্তান না থাকায় তার জীবীকা নির্বাহের জন্য নিজ উদ্যোগে একটি দোকান এবং কেউ তাকে দুই শতাংশ জমি দান করলে সেখানে সরকারি খরচে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দেন ইউএনও।
ইউএরও শুক্লা সরকারের এই মহানুভবতায় আপ্লুত মায়া বেগম বলেন, বন্দরের নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তাদের গাফিলতির কারণে গত ছয়টি বছর অনাহারে অর্ধাহারে ভিক্ষা করে জীবন যাপন করছি। বছরের পর বছর ধরে আমার জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধনের অনুরোধ জানিয়ে আসলেও তারা আমাকে নানা অজুহাতে অফিস থেকে বের করে দিয়েছে।
সম্প্রতি আমার স্বামীর সহকর্মী মো. হাকিম মাস্টারের ছেলে আলোকিত বাংলাদেশের সাংবাদিক হাজী সফিকুল ইসলাম আমাকে রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখে সব কথা শুনে ইউএরও ম্যাডামের কাছে নিয়ে যান।
তিনি আমার কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দফতরে নিজে ফোন করে দ্রুত আমার ভোটার আইডি সংশোধনে প্রয়োজনয়ি সব কাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন। আমি প্রাণ খুলে ইউএনও ম্যাডাম এবং সাংবাদিকদের জন্য দোয়া করছি।
উল্লেখ্য, মায়া বেগম নামে ওই গৃহবধূর শিক্ষক স্বামী দ্বীন মোহাম্মদ খান ১৯৯২ সালে পেনশনে যান। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা যাওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী মায়া বেগম স্বামীর পেনশন-ভাতা উত্তোলণ করে আসছিলেন।
২০১৫ সালে জাতীয় পরিচয় পত্রে ভুল নাম উঠার কারণে গত ৬ বছর ধরে তিনি স্বামীর পেনশনের টাকা তুলতে পারছেন না। সন্তানহীন এই বৃদ্ধা এখন দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
মায়া বেগম জানান, জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধনের জন্য বার বার বন্দর নির্বাচন কার্যালয়ে গেলেও তাকে সেবা না দিয়ে বের করে দেওয়া হয়।
নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের গাফিলতির কারনে একজন স্কুল শিক্ষকের বৃদ্ধা স্ত্রী এখন দ্বারে দ্বারে ভিক্ষা করছেন। অর্ধাহারে অনাহারে অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছেন মায়া বেগম।
এ ব্যাপারে বন্দর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা শুল্কা সরকার জানান, বিষয়টি আগে কেই আমাকে জানায়নি। ভুক্তভোগী মায়া বেগম বুধবার আমার কাছে এসেছিলেন। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, আশা করি দ্রুত তার সমস্যার সমাধান হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন