বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তহশীলদার আতাউরের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ! প্রত্যাহার দাবী
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ- নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে বেআইনী ও অনৈতিক ভাবে সুবিধা গ্রহন, দালাল চক্রের মাধ্যমে জমির মালিকদের হয়রানি,নামজারী ও পর্চা বাবদ ইচ্ছেমত টাকা আদায় সহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ব্যাপারে সিরাজ মিয়া নামে একজন জমির মালিক জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ করেও কোন ফল পাননি। ফলে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা আতাউর রহমান।
শুধু তাই নয় একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে আতাউর রহমান তার সরকারী ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করে দীর্ঘ ৫ বছর যাবত বক্তাবলী ভূমি অফিসে অবস্থান করে জমির মালিকদের জীবন অতিষ্ঠ করে তোলার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী মহল। তারা বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস হতে আতাউর রহমান কে প্রত্যাহার করে নিতে জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজ এর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারী বক্তাবলীর চরবয়রাগাদী গ্রামের মৃত হযরত আলীর পুত্র সিরাজ মিয়া জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত আবেদন পত্র দিয়েছেন আতাউরের বিরুদ্ধে।
তাতে তিনি উল্লেখ করেন, এসএ ৫৯৮, আরএস ৬৪২ নং দাগে ৪১ শতাংশ জমির মালিক ছিলেন রাজেন্দ্র চন্দ্র ধর। পরে তিনি একমাত্র স্ত্রী মিলন বালা ধরকে রেখে নিঃসন্তান রেখে মারা যান। স্বামীর ওয়ারিশ সুত্রে মিলন বালা ধর জমির মালিক হন। ১৯৭৫ সালের ১৯ নভেম্বর ৮৮০৫ নং সাফ কবলা দলিল মূলে জমির মালিক হন অভিযোগ দায়ের কারী সিরাজ মিয়ার পিতা হযরত আলী।
পিতার মৃত্যুর পর সিরাজ মিয়া ও তার ভাই বোন ওয়ারিশ সুত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখল করে আসছিলেন। ২০২০ইং সালের ১ ডিসেম্বর উক্ত জমির নামজারী করার জন্য বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গেলে সেখানকার দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তা আতাউর রহমান ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবী করেন নামজারী করে দেয়ার জন্য।
কৃষক সিরাজ মিয়া এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলায় পরে আসেন বলে ঘুরাতে থাকেন এবং দাবীকৃত ১ লাখ টাকা না দিলে উক্ত জমি খাস হিসেবে আবেদন করা হবে বলে হুমকি দেন।
২০২২ সালের ২৫ জানুয়ারী পূনরায় নামজারী করার জন্য অত্র অফিসে গেলে আতাউর রহমান জানান,উপরোক্ত ভূমি খাস জমিতে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো উল্লেখ করেন আতাউর রহমানের বিরুদ্ধে অনেক মানুষের অভিযোগ রয়েছে। গভীর রাত পর্যন্ত বাহিরের দালাল প্রকৃতির লোকজন নিয়ে অফিসে করে ও
শতাংশ অনুযায়ী নামজারীর ঘুষ নিয়ে থাকে। সরেজমিন বক্তাবলী ঘুরে জানা যায়, আতাউর রহমান উক্ত অফিসে যোগদান করার পর হতে দূর্নীতির আখরায় পরিনত হয়েছে বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিস।
এলাকা ভিত্তিক দালাল নিয়োগ ও করেছেন। এদের মধ্যে মধ্যনগর গ্রামের জসিম,ছোট মধ্যনগর গ্রামের আকতার,গোপালনগরের কবির মীর ভেন্ডার,কানাইনগর
গ্রামের শামীম,মোক্তার,সোলায়মান,আরিফ প্রসন্ননগর গ্রামের শাহাবুদ্দিন, কানাইনগর গ্রামের তুহিন,লক্ষীনগর
গ্রামের বাদল,দুদু,রাসেল,কাশেম খান, রাজাপুরের নুর মোহাম্মদ,আসাদউল্লাহ,গঙ্গানগরের মজিবর, রাধানগরের মতিন গাজী উল্লেখযোগ্য।
এদের মাধ্যমে জমির কাগজপত্রে এদিক সেদিক করে কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন আতাউর রহমান। দূর্নীতি দমন কমিশন গোপন তদন্ত করলেই আতাউর রহমানের বিপুল পরিমান সম্পদের মালিক হয়েছে বলে বের হবে মনে করেন ভূক্তভগী ও সচেতন মহল। দূর্নীতিবাজ ও সাধারণ মানুষ কে হয়রানি করে অর্থ আদায়কারী আতাউর রহমানের প্রত্যাহার সহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানান ভুক্তভোগী মহল।
এছাড়াও ২০১৯ সালের ২০ অক্টোবর আমির হোসেন, পিয়ার হোসেন সহ ৭৬ জন এলাকাবাসীর স্বাক্ষরিত একটি আবেদন পত্র জেলা প্রশাসক কে দেয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ৬ এপ্রিল ভূমি মন্ত্রী ও ভূমি সচিবের নিকট ২৩ জন ভূমি মালিকের পক্ষে দেলোয়ার হোসেন আবেদন পত্র দেন। দূর্নীতিবাজ আতাউর রহমান একজন সচিবের নাম ব্যবহার করে (পরবর্তী রির্পোটে সচিবের নাম উল্লেখ করা হবে) সব ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে বক্তাবলী ভূমি অফিসে কাটাচ্ছেন।
সুচতুর,ধুরন্ধরবাজ আতাউর রহমান যখন যে ব্যক্তি নারায়ণগঞ্জে জেলা প্রশাসক হিসেবে আসে তাকে বিশেষ কায়দায় ম্যানেজ করে থেকে যান বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসে। ৫ বছর যাবত একই স্থানে রয়ে গেলেও কোন ডিসিই তাকে বক্তাবলী হতে সরাতে পারেনি। যা তিনি নিজেই গর্ব করে বলে থাকেন।
এ ব্যাপারে বক্তাবলী ইউনিয়ন ভূমি অফিসের ভূমি উপ সহকারী কর্মকর্তা মোঃ আতাউর রহমান মুঠোফোনে জানান, আমি ৩২ বছর যাবত চাকুরী করি। ঘুষ দিয়ে চাকুরীতে আসি নাই যে ঘুষ নিতে হবে। কিছু দুষ্ট লোক এ সকল অপপ্রচার চালাচ্ছে। মুলত উক্তস্থানে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অসহায় পরিবারের জন্য ২৫টি ঘর নির্মান করা হবে। আমি নারায়ণগঞ্জের সব পত্রিকার সাথে জড়িত। আমার বিরুদ্ধে লেইখ্যা কিছুই করতে পারবেন না। যদি পারেন সরকারের কাজে সহযোগিতা করুন। যদি কেউ মিথ্যা অপপ্রচার চালায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আমি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন