আমি তৌহিদ এলাহী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে ভর্তি হবার পর পুরো বিশ্ববিদ্যালয় জীবন কাটিয়েছে বিভিন্ন লেখালেখি টিউশনি এগুলো করে। তাছাড়া পাশাপাশি চলতে মুভি দেখা বই পড়া খেলাধুলা এবং আড্ডা। তবে পড়াশোনার অভ্যাস ছিল। কিন্তু চেয়ার টেবিলে বসে পড়াশোনা আমি খুব একটা করিনি বললেই চলে। বিভিন্ন খবরের কাগজ এবং সম্পাদকীয় গুলো মনোযোগ সহকারে পড়তাম। চোখের সামনে যা কিছু দেখতাম সবকিছুই একবার হলেও করে ফেলতাম।
অনার্স শেষ করার পর পর আমি প্রথম বিসিএস পরীক্ষা দেই এবং অবিশ্বাস্যভাবে প্রথমবার ঐ প্রিলিমিনারিতে টিকে যাই। এরপর রিটেন এ অংশগ্রহণ করি। রিটেন পরীক্ষায় পাট্রিয়টিজম টাইপের একটা রচনা এসেছিল যেখানে আমার দেখা একটা মুভির কিছু কিছু ডায়লগ একেবারে হুবহু কপি করে লিখে দিয়েছিলাম। নিজের লেখা রচনা অবশ্য ভালোই লেগেছিল।
প্রথম বারেই বিসিএস পরীক্ষা দিয়ে টিকে যাওয়া আমার কাছে খুব একটা কঠিন মনে হয়নি। আলাদা করে যদিও আমি কোনো প্রস্তুতি নেইনি। কিন্তু বিসিএস এর বিভিন্ন টপিকগুলোর একেবারে মৌলিক বিষয়গুলো সব সময় জানার চেষ্টা করতাম। সেইসাথে সমসাময়িক পত্রপত্রিকায় পড়ে সবসময় আপডেট থাকতাম।
বিসিএস ভাইভা দেওয়ার আগে আমি আইবিএ তে চান্স পাই এমবিএ করার জন্য। এখন চাকুরীর পাশাপাশি আমি এমবিএ করছি। আপনাদেরকে একটা মজার কথা বলতে চাই, আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সবচেয়ে বেশি পড়াশোনা করেছি ট্রাফিক জ্যামের কবলে পড়ে বাসে বসে বসে।
অতটা বেশি প্রস্তুতি না থাকায় ভাইভা বোর্ডে গিয়ে অনেকটা ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তাছাড়া ভাইভাতে বেশিরভাগ প্রশ্ন করা হয়েছিল ইংরেজিতে। সাধারণ জ্ঞান সম্পর্কে আমার তেমন একটা জানা ছিল না বলে অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি। কিন্তু আমি আমার দুর্বলতা স্বীকার করেছিলাম সেই সাথে বলেছিলাম যে এই দুর্বলতা কাটিয়ে উঠব আমি ইনশাআল্লাহ।
এই ছিল আমার বিশেষ জীবনের গল্প। এটাই আমার প্রথম চাকরি এবং তিন দিনের প্রশিক্ষণ নিয়ে আমার যা করে জীবন শুরু হয় লক্ষীপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। কাজের প্রথম দিনেই অনেকে ফুলেল শুভেচ্ছা দিয়ে আমাদের বরণ করে নেন এবং তার কিছুদিন পর ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আমার ট্রান্সফার হয়।
প্রশাসনিক কাজের সবচেয়ে ভালো দিক হলো আপনি কখনোই একঘেয়ে হয়ে যাবেন না এবং প্রতিদিন ঐ কাজের নতুন নতুন মাত্রা যোগ হবে। পরিচয় হবে নতুন নতুন মানুষের সাথে। ঠিক যেন চ্যালেঞ্জিং রোমাঞ্চিত একটা জীবন। আসলে বিসিএস থেকে শুরু করে আজকের অফিস জীবন পুরোটাই আমার কাছে একটা চ্যালেঞ্জিং গল্প বলে মনে হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন