সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ-নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলায় একই সঙ্গে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছে এক তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। দুটি স্কুলের হাজিরা খাতাতেই তার শতভাগ উপস্থিতিও আছে। প্রায় ছয় মাস ধরেই এ ঘটনা ঘটছে।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ওই ছাত্রীর বাবা আক্তার মামুন শিপার মোগরাপাড়া ইউনিয়নের পাঁচপীর দরগাহ এলাকার বাসিন্দা ।তিনি উপজেলার পাঁচপীর দরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য তার মেয়ে আননিসা তাসফিকে ভর্তি করেছেন। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও শ্রেণি শিক্ষকের সহযোগিতায় নিয়মিত হাজিরাও দেখাচ্ছেন।
আননিসা তাসফি মোগরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও তৃতীয় শ্রেণির নিয়মিত শিক্ষার্থী। তার রোল নম্বর ৫১। প্রথম শ্রেণি থেকেই সে এই স্কুলে পড়ছে। সম্প্রতি আক্তার মামুন শিপার পাঁচপীর দরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার জন্য তাঁর মেয়ে তাসফিকে প্রত্যয়নপত্র ছাড়াই চলতি বছরের জুন মাসে সেখানে ভর্তি করান। সেখানে তার রোল নম্বর ৩। সে নিয়মিত মোগরাপাড়ার স্কুলেই যায়, তবে পাঁচপীর দরগাহ স্কুলে উপস্থিত না হলেও প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহারের নির্দেশে শ্রেণি শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দাস নিয়মিত হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন। খবর পেয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দুই স্কুলের হাজিরা খাতাসহ প্রধান শিক্ষকদের তলব করেছেন।
গতকাল সরেজমিনে মোগরাপাড়া স্কুলে গিয়ে তাসফিকে তার শ্রেণিকক্ষেই পাওয়া যায়। এ সময় তাসফি জানায়, সে এই স্কুলে শনি থেকে বুধবার এবং পাঁচপীর দরগাহ স্কুলে বৃহস্পতিবার ক্লাস করে। কিন্তু পাঁচপীর দরগাহ স্কুলে গিয়ে হাজিরা খাতায় তাসফির নিয়মিত উপস্থিতি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে মোগরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিতাই চন্দ্র বর্মণ বলেন, তাসফি আমার বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির নিয়মিত ছাত্রী। সে অন্য কোনো স্কুলে ভর্তি হয়েছে কি না আমার জানা নেই।'
পাঁচপীর দরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাসফির শ্রেণি শিক্ষক সঞ্জয় কুমার দাস হাজিরা খাতায় নিয়মিত উপস্থিতির বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক শামসুন্নাহার বলেন আমি যা করেছি এ বিষয় অভিযোগ হয়েছে আমি যা বলার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বলব সাংবাদিকদের এই বিষয়ে আমি কোন সদুত্তর দিতে পারব না । তবে হাজিরা খাতায় প্রতিদিন উপস্থিতির বিষয়ে শ্রেণি শিক্ষকই ভালো বলতে পারবেন।'
তাসফির বাবা আক্তার মামুন শিপার বলেন, 'আমার মেয়ে মোগরাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। পরে তাকে জুন মাসে পাঁচপীর দরগাহ স্কুলে ভর্তি করেছি। সে বর্তমানে দুটি স্কুলেই লেখাপড়া করে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতর রহমান জানান, একজন শিক্ষার্থী একই সঙ্গে দুটি স্কুলে ভর্তি থাকতে পারে না। দুই স্কুলেই নিয়মিত উপস্থিতি কিভাবে ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন