মোঃ মোয়াশেল ভূইয়াঃ-আগামী শনিবার ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগ ও বিএনপির তৎপরতায় রাজনৈতিক অঙ্গন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। বিএনপি যে কোন উপায়ে সমাবেশে যোগ দিতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যদিকে ওইদিন রাজপথে থাকার প্রস্তুতি নিচ্ছে আওয়ামীলীগ। হামলা-মামলা ও গ্রেফতার সকল কিছু মোকাবেলা করেই নারায়ণগঞ্জ বিএনপি ঢাকার গণসমাবেশে যোগ দিকে বলে তারা সাফ জানিয়ে দিয়েছে। ক্ষমতাসীন দলও রাজপথ ফাঁকা ছেড়ে দিতে নারাজ। ফলে নারায়ণগঞ্জে উত্তেজনাকর এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে ১০ ডিসেম্বরে।
জানাগেছে, আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতৃবৃন্দেরকে রাজপথে থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। তবে বিএনপির সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। সেই সঙ্গে মহাসমাবেশ ঘিরে যে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে, বিশেষ করে ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি রাজপথে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এমনটি জানিয়েছেন দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা।
এদিকে গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সাতটি থানায় ১১টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলা বাদী হয়েছেন পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দলের সমর্থিত কর্মীরা। মামলার ১০৬২ জনকে আসামি করা হয়েছে। গ্রেফতার করা হয়েছে প্রায় ৩৫ জন নেতা কর্মীকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে গ্রেপ্তার আতঙ্ক।
আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকার গণসমাবেশকে সাফল্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর বিএনপি সবধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন। দলটির পক্ষ থেকে সমাবেশের আগে গ্রেপ্তার এড়াতে নেতাকর্মীদের কৌশল অবলম্বন করতেও বলা হয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ঢাকার গণসমাবেশকে অংশগ্রহণ করবে নারায়ণগঞ্জ বিএনপি এমনটাই জানাগেছে।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, আওয়ামীলীগ শত চেষ্টা করলেও এ আন্দোলন থেকে দেশে জনগণকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। কারণ নারায়ণগঞ্জের জনগণ জেগে উঠেছে। আগামী ১০ই ডিসেম্বর ঢাকাতে যে বিভাগীয় গণসমাবেশ হবে বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বিরল সমাবেশ ও ইতিহাসে থাকবে। সেই দিন ঢাকা বিভাগ সহ সারা বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণ এই সমাবেশে যোগদান করবেন। এই সমাবেশকে সফল করতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ঐক্যবদ্ধ। আওয়ামী লীগ ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী ও প্রশাসন দিয়ে যতই বাঁধার সৃষ্টি করুক কখনোই সফল হবে না। এর কোন বাঁধাই জনগণ মানবে না। সকল বাঁধাকে অপেক্ষা করে আমরা রাজপথে আন্দোলনের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ঢাকা সমাবেশকে সফল করবে। মহানগর বিএনপি রাজপথে আছে এবং রাজপথেই থাকবে । এই সরকারের পতন ঘটিয়েই রাজপথ ছাড়বো ইনশাল্লাহ।
তবে দলীয় একটি সূত্রে জানায়, আগামী ১০ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশে নারায়ণগঞ্জ থেকে বিএনপির বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধভাবে যাতে যেতে না পারে সেই জন্য আওয়ামী লীগ ব্যাপক তৎপরতা চালাবে। আইনশৃংখলা বাহিনীর পাশাপাশি আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরাও তৎপর থাকবে। যদিও আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বলেছিলেন বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে কোনো বাঁধা দেওয়া হবে না। যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি সাধন করার চেষ্টা করে তাহলে ছাড় দেয়া হবে না।
নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগের নেতাদেরও ঠিক একই ভাষ্য নারায়ণগঞ্জের রাজপথ বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কোন হস্তক্ষেপ করে না। যদি আগামী ১০ডিসেম্বর গণসমাবেশের নামে নারায়ণগঞ্জে কোন অস্থিতিশীল পরিস্থিতির তৈরির চেষ্টা করে তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। কেন্দ্রীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে পেয়েছে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ এমনটাই জানাগেছে।
১০ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রাজপথে থাকবে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের গুলো। সকল প্রকার সহিংসতা রোধে মাঠে থাকবে পুলিশ প্রশাসন । পাশাপাশি ওইদিন সকাল থেকেই মাঠে থাকবে নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই বলেন, প্রত্যেকটি দলের রাজনৈতিকভাবে সভা সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। বিএনপি যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করলে আমাদের কোন আপত্তি নেই। যদি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির নামে নতুন করে কোনো সহিংসতার সৃষ্টি করে তাহলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। পাশাপাশি ১০ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
ফলে ১০ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জের রাজপথ দিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের বাঁধা উপেক্ষা করে ঢাকার সমাবেশে কিভাবে যোগ দেয় তার দেখার অপেক্ষায় নারায়ণগঞ্জবাসী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন