আজকের সংবাদ ডেক্সঃ-নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে এক নারীর স্বাভাবিক মৃত্যুর পর কবর দেওয়া হয়,কিন্তু মৃত্যু স্বাভাবিক নয় এমন দাবি করে অভিযোগের দুই মাস পর কবর থেকে নারীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বুধবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মো: হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা এলাকার স্থানীয় কবরস্থান থেকে মমতাজ বেগম (৫৮) এর লাশ উত্তোলন করা হয়।
স্থানীয়রা জানায়,উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা গ্রামের আব্দুল খালেক প্রধানের মেয়ে মমতাজ বেগম। ৩০/৩৫ বছর আগে তার স্বামীর মৃত্যু হয় পরে বাবার বাড়ি ছয়হিস্যা গ্রামে ছেলে মামুনের সাথে থাকতো তিনি। গত ১৮ এপ্রিল রাতে মৃত্যুবরণ করে ঘরের মেঝেতে পরে থাকে মমতাজ। পরের দিন সকালে ছেলে মা’কে মেঝেতে পরে থাকতে দেখে প্রতিবেশী ও আত্বীয় স্বজনকে খবর দেয়। মমতাজের বাবা ও তার পরিবারের দাবি মমতাজ ঘুমিয়ে থাকাবস্থায় স্ট্রোকে হয়তো মৃত্যু হয়েছে। পরে ১৯ এপ্রিল সামাজিকভাবে স্থানীয় কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
এদিকে নিহত মমতাজ বেগমের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি দাবি করেন, তার বাবার বাড়ির পরিবারের সাথে মমতাজ বেগমের মধ্যে পারিবারিক কলহ মমতাজ বেগমের টাকা ও জমি নিয়ে প্রতিদিন কোন না কোন ঝগড়া লেগেই থাকতো। এছাড়া তার ভাই মামুনের স্ত্রী’র সাথে তার মায়ের কলোহের কথা স্থানীয়দের অজানা নয়। আর তার মায়ের মৃত্যুর বিষয়টিও তাকে ও তার অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনদের অনেক বিলম্বে জানানো হয়।
মুন্নি আরও বলেন, মায়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে তিনি বাড়ি গিয়ে তার মায়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঁঘাতের চিহ্ন এর সাথে ডান চোখ রক্তাক্ত এবং অস্বাভাবিক (আঁঘাতের চিহ্ন) দেখতে পান। কিন্তু খালেক প্রধানের পরিবার এর দাবি মমতাজ স্ট্রোকে মারা গেছেন। এমতাবস্থায় মমতাজের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি তার মায়ের লাশ ময়না তদন্ত করার দাবি করেন। এক পর্যায়ে মমতাজ বেগমের বাবার বাড়ির লোকজন তাকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে লাশ দাফন করেন।
লাশ দাফনের ৮দিন পর ২৭ এপিল নিহতের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি বাদি হয়ে জেলা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে একটি পিটিশন মামলা করেন।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ আদালতের নির্দেশে তদন্তের স্বার্থে লাশ উত্তোলন করতে আসলে আমরা মমতাজ বেগমের লাশ উত্তোলনে সাহায্য করেছি।
নিহতের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নির দাবি, তার মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া তার ঘরে থাকা টাকা পয়সা, স্বর্ণলংকার ও জমির দলিলপত্রের কোন সন্ধান তিনি পাননি।
নারায়ণগঞ্জ সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আদালতের নির্দেশের মমতাজ বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। রহস্য উদ্ঘাটনের জন্য লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন