সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ- শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সোনারগাঁ উপজেলার কমিটিতে সভাপতির পদ পেয়েছেন ধর্ষণ চেষ্টার একাধিক মামলার আসামি জাহাঙ্গীর আলম লিটন। এনিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে এবং শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সোনারগাঁ উপজেলা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলার একাধিক নেতা এই নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
জাহাঙ্গীর আলম লিটন সোনারগাঁও পৌরসভার নোয়াইল গ্রামের মৃত সুরুজ মেম্বারের ছেলে। তাঁহার নামে বিগত ১/৪/২৩ইং তারিখে সোনারগাঁ থানার মামলা নং ১(৪)২৩, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৭/৯(৪)খ, তৎসহ দন্ডবিধি-১৮৬০ এর ৩২৩/ ৩৭৯/ ৫০৬(।।) ধারায় মামলা রুজু হয়। সোনারগাঁ থানা পুলিশ আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন কে বিগত ১/৪/২৩ ইং তারিখে গ্রেফতার করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন সহ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করে। আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটনের পক্ষে তাঁহার আইনজীবী জামিনের প্রার্থনা করিলে বিজ্ঞ আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে ২ দিনের জেলগেটে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ মঞ্জুর করেন। পরবর্তী বিজ্ঞ নিম্ন আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন এর আইনজীবী নারায়ণগঞ্জের বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ১৭৯৪/২৩ নং ফৌজদারী মিস দায়ের করেন এবং বিগত ১৭/৪/২৩ ইং তারিখে উক্ত ফৌজদারী মিস মামলা শুনানী অন্তে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালত আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন এর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জামিন নামঞ্জুরের আদেশের বিরুদ্ধে আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন এর আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে ফৌজদারী মিস মামলা দায়ের করেন এবং শুনানী অন্তে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন এর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন ফলে আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন সোনারগাঁ থানার মামলা নং ১(৪)২৩, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৭/৯(৪)খ, তৎসহ দন্ডবিধি-১৮৬০ এর ৩২৩/ ৩৭৯/ ৫০৬(।।) ধারায় মামলাত জামিনে আছেন।
মামলার এজহার সুত্রে জানা যায়, গত ২৮/০৩/ ২০২৩ ইং সোনারগাঁও পৌরসভার নোয়াইল এলাকার ফটিক মিলের একজন নারী শ্রমিক উপজেলা মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় বাজার করার উদ্দেশ্য পৌরসভার আদমপুর বাজার থেকে সকাল ১০ টার সময় রিক্সা করে সোনারগাঁ যাদুঘর ২নং গেটের সামনে পৌঁছাইলে আসামীগন মামলার বাদী মোসা: মাসুদা আক্তার এর রিক্সা গতিরোধ করে জোর পূর্বক টেনে হিছড়ে অজ্ঞাতনামা সিএনজি করে সোনারগাঁ উপজেলার সনমান্দি এলাকার নজরুল ইসলামের ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে যায় এবং মামলার ১নং আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন, ২নং আসামি খোকন, ৩নং আসামি মনির বাদীকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) পংকজ কান্তি সরকার বলেন, ধর্ষণ চেষ্টা মামলার তদন্ত করে আমরা ঘটনার সত্যতা পেয়ে মামলার ১নং আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন সহ অন্যান্য আসামীদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ৭/৯(৪)খ, তৎসহ দন্ডবিধি-১৮৬০ এর ৩২৩/৩৭৯/৫০৬(।।) ধারায় চার্জশিট বা অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। অভিযোগপত্র নং-১৫১, তারিখ-২৯/০৪/২৩ইং এবং বর্তমান মামলাটি বিজ্ঞ আদালতে বিচারধীন আছে।
অন্যদিকে অনুসন্ধানে জানাজায় আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) এর ১০/ ৯(৪)খ ধারায়, অন্য একটি মামলার আসামী যার নারী ও শিশু মামলা নং-৩৬৩/২৩ এর ওয়ারেন্ট ভূক্ত পলাতক আসামী। সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাবুব আলম বলেন আসামী জাহাঙ্গীর আলম লিটন বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ৩৬৩/২৩ নং মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক আসামী তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের একাধিক সংস্থা মাঠে কাজ করছে।
সোনারগাঁ উপজেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের একাধিক নেতা এই নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। ধর্ষণ চেষ্টা মামলার আসামি শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সোনারগাঁও উপজেলা কমিটির সভাপতি হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়ে পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা। তারা অচিরেই জাহাঙ্গীর আলম লিটনের নাম বাদ দিয়ে নতুন করে কমিটি ঘোষণার আহ্বান জানান। জাহাঙ্গীর আলম লিটনকে একাধিকবার তার ব্যবহৃত মোবাইলে ০১৩১৯৬৭০৬৯২ ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি।
শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের জেলা কমিটির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খাঁন ওবায়েদ উপরোক্ত বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, সোনারগাঁ উপজেলা কমিটির অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতারা। এ কথা বলেই তিনি এড়িয়ে যান। উল্লেখ্য যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ট পুত্র শেখ রাসেল এর নামে গড়ে উঠা সংগঠনটিকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত একটি স্বার্থণ্বেষী মহল। সমাজের চিহ্নিত অপরাধীরা/সন্ত্রাসী এবং একাধীক মামলার আসামীরা তাদের অপরাধ ঢাকা দিতে সংগঠনটিকে বিতর্কিত করছে। জানাযায়, গত (২৬ মে) শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ জেলা শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন খাঁন (ওবায়েদ) ও আল মামুন রশিদের স্বাক্ষরিত সোনারগাঁ উপজেলার ৩ বছরের জন্য ৬৩ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়া হয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন