মোঃ নুর নবী জনিঃ- নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি নিয়ে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগ ঘোষিত সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার।
গত ৪ জুলাই রাতে দলীয় প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো. শহীদ বাদল স্বাক্ষরিত ৭১ সদস্যর পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ করা হয়। বুধবার দুপুরে পূর্ণাঙ্গ কমিটির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই। কমিটি প্রকাশের পর থেকেই স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। পদ বঞ্চিত নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, জেলা কমিটির পক্ষ থেকে এভাবে উপজেলা কমিটি অনুমোদন দেয়া ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা। আমরা এ কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছি। এ জন্য যা কিছু প্রযোজন তাই করা হবে। এদিকে, বুধবার কমিটির তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। জেলা আওয়ামী লীগের অনুমোদিত কমিটিতে দলের অনেক পরীক্ষিত নেতা বাদ পড়েছেন। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যর প্রস্তাবিত কমিটি থেকে ১৯ জন সদস্যকে বাদ দিয়ে এবং বেশ কিছু পরিবর্তন করে ৭১ সদস্যর নতুন কমিটির অনুমোদন দিয়েছে জেলা কমিটি।
বাদ পরা ১৯ জনের মধ্যে জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা আওয়ামীলীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের নাম রয়েছে। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম আব্দুল হাই এর পুত্র আহসান হাবীব টিপু জানান, অনুমোদিত কমিটি নিয়ে আমি হতাশ। আমার বাবা সোনারগাঁ আওয়ামী লীগের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। বিএনপি জামায়াত সরকারের সময় বাবাসহ আমার পুরো পরিবার অসংখ্য মামলা-হামলার শিকার হয়েছি। কিন্তু আমার নাম প্রস্তাবিত কমিটিতে থাকলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে আমাকে বাদ দেয়া হয়েছে। কিভাবে এমন কমিটি হলো তা আমার বোধগম্য নয়।
কমিটি নিয়ে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের কমিটি আমরা মানি না। আমাদের সাথে কোন ধরনের পরামর্শ না করেই জেলা আওয়ামী লীগ কমিটির অনুমোদন দিয়েছে। যাদের কেউ চিনে না- এমন অনেক ব্যক্তিকে কমিটিতে আনা হয়েছে। এ বিতর্কিত কমিটির অভিযোগ নিয়ে প্রয়োজনে দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে যাব। তিনি আরো জানান, উপজেলা পর্যায়ে আমরা কাদের নিয়ে রাজনীতি করবো- সেটা আমাদের চেয়ে জেলা ভালো জানেন না। শুনেছি বিপুল অঙ্কের টাকার বিনিময়ে প্রস্তাবিত কমিটিকে ওলট পালট করে তারা এ কমিটি দিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানান, আমরা যে কমিটি অনুমোদন দিয়েছি তা সঠিক মনে করি। সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ কমিটিকে না মানলে আমাদের কিছু করার নেই। মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে কমিটির পদ দেয়ার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে কমিটিতে পদ দেয়ার প্রশ্নই আসে না। যারা যোগ্য তাদেরকেই পদ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর সম্মেলনের মাধ্যমে কেন্দ্রেীয় নেতৃবৃন্দ সভাপতি, সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ সদস্যর সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন করে দেন। কমিটিকে নির্দেশ দেয়া হয় তিন মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার। নানা করণে উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন বিলম্বিত হয়। চলতি বছর মে মাসে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের ৭১ সদস্যর প্রস্তাবিত কমিটি ঘোষণা দেয় সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগ। ৭ জুন প্রস্তাবিত কমিটিকে নিয়ে একটি পরিচিতি সভাও করা হয়। এ নিয়ে ক্ষিপ্ত হন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন