সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ- বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত 'শান্তি সমাবেশে বলেছিলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে কোনো পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নয়, সারা বছরই রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগ বিএনপিকে ভয় পায় না। আমরা ভয় পাই তাদের অগ্নিসন্ত্রাস কর্মকান্ডকে। তাই জনগণকে রক্ষায় রাজপথ আমরা পাহারা দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, রাজপথে কাউকে নামতে দেব না, এটা তো আমরা বলি না,কারণ রাস্তা সবার। আমরা জনগণের স্বার্থে রাজপথে পাহারাদার হিসেবে আছি। জনগণকে রক্ষার জন্য আমরা রাজপথ পাহারা দেব। তারা (বিএনপি) সাম্প্রদায়িক শক্তির বন্ধু। তাদের ক্ষমতায় বসার অধিকার নেই,তারা আগের মতো অগ্নিসন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের পরিকল্পনা করছে।
দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এই নির্দেশকে অমান্য করে জামায়াত বিএনপির দেয়া অবরোধের তৃতীয় দফার দ্বিতীয় দিনে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কাঁচপুর ও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের কোনস্থানে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের কাউকেই পাওয়া যায়নি। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমকে দেখা গেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেঘনা নিউ টাউন এলাকায় অবরোধ বিরোধী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিতে।
এদিকে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তায় প্রতিদিনের ন্যায় জাপা নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা যায়।
তবে মহাসড়কের কোন অংশেই আজ বিএনপি নেতাকর্মীদের কোন কর্মসূচি পালন করতে দেখা যায়।
অপরদিকে মহাসড়কের ঢাকা-চট্টগ্রাম ও সিলেট মুখের কাঁচপুর বাসস্টান্ড এলাকায় আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের মঞ্চে কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। আশপাশের দোকানদার ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কাঁচপুর এলাকায় কোন কর্মসূচী পালন করেননি নেতারা। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সোনারগাঁ থানা পুলিশের অবস্থান লক্ষ্য করা যায় ।
স্থানীয় লোকজন জানান, বিএনপি জামায়াতের ডাকা হরতাল অবরোধের কর্মসূচীতে প্রতিদিন সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সার সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ও মোশারফ ওমরকে দেখা গেলেও গতকাল বুধবার সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার ও আজ বৃহস্পতিবার উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার, সহ-সভাপতি ও কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশারফ ওমরকে দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সকালে সিনিয়র সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুম ছাড়া কোন নেতাকর্মীকে মহাসড়কে দেখা যায় নি। তারা জানান,কেন্দ্রের নির্দেশ উপেক্ষা করে নেতারা যে যার মত ব্যক্তিগত কাজ নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যার জন্য দলীয় কর্মসূচীকে কোনভাবেই তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
কয়েকজন আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাকর্মী জানান, সম্প্রতি উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া নিজেকে এমপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল কায়সার নিজেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছেন ও সোনারগাঁও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এরফান হোসেন দীপও সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে নিজেকে ঘোষনা দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছেন। অপরদিকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি মোশাররফ ওমরও নিজেকে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষনা দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পোষ্টার ফেষ্টুন ব্যানার সাটিয়ে কর্মসুচি পালন করে আসছেন।
এছাড়াও হাফ ডজন আওয়ামীলীগ নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে লবিং শুরু করেছেন। তারা বলেন, আওয়ামীলীগের নাম ও ক্ষমতা ব্যবহার করে যেসকল লোকেরা কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তাদেরকে আজ দলের কোন কর্মসূচীতে পাওয়া যাচ্ছে না। এসকল নেতাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার দাবি জানান তারা।
উপজেলা যুবলীগ লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হোসেন জানান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও পিরোজপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মাসুদুর রহমান মাসুমের নেতৃত্বে সকাল থেকেই মেঘনা এলাকায় মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে শান্তি সমাবেশ করছি।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও কাঁচপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোশাররফ ওমরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি আজ শান্তি সমাবেশে উপস্থিত ছিলাম না। তাহলে কি আপনারা দলীয় নির্দেশনা মানছেন না? এই প্রশ্নের জবাবে ফোনটি কেটে দেন তিনি।
কেন্দ্রের নির্দেশ পালন না করার বিষয়ে জানতে কয়েকবার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল কায়সারকে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়া জানান, আমি ঢাকা থেকে আসার সময় কাঁচপুরে কোন নেতাকর্মীকে না পেয়ে উপজেলা পরিষদে চলে এসেছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই জানান, দলীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভে মিছিলে আছি পরে কথা বলব।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন