রূপগঞ্জ প্রতিনিধিঃ-শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা উপেক্ষা ও অনিয়ম করে নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নের দাউদপুর পুটিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে । বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গাফ্ফার ও সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলামের যোগসাজশে একটি প্রভাবশালী মহল গঠনতন্ত্র উপেক্ষা এবং আইন লঙ্ঘন করে একটি পকেট কমিটি গঠনের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন কমিটির অন্যান্য প্রার্থী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
এ নিয়ে ওই এলাকাবাসী শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এদিকে পকেট কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া বাতিল করে পুনরায় তফছিল ঘোষনার মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও জনপ্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অনিয়ম তদন্তে ও পুনরায় তফছিল ঘোষনার দাবিতে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে গত ২৫ মার্চ লিখিত অভিযোগ করেছেন দাউদপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৩নং ওয়ার্ডের সদস্য মোহাম্মদ আরিফুল হক সাগর।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মার্চে নোটিশ না দিয়েই পুটিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির কমিটি গঠনের জন্য দুপুর ১ টার সময় ফরম বিক্রি শুরু করে এবং দুপুর ২ টায় শেষ হয়েছে বলে জানান প্রধান শিক্ষক আব্দুল গাফ্ফার । যেখানে ১.০০ টায় ফরম বিক্রয় শুরু করেন, এখানে আগে বিনা নোটিশে ও অভিবাবকদের না জানিয়ে। এও খবর পাওয়া যায়, প্রধান শিক্ষক অত্র স্কুলের দপ্তরী সায়েম কে দিয়ে মনঘরামত জায়গায় নোটিশ লাগিয়ে মোবাইলে ছবি তুলে নোটিশ উঠিয়ে নিয়ে যায়,যা ঐ দিন বিকেলে খুজ করলে একটিও চোখে মিলে না। সাবেক সভাপতির নিজস্ব সিলেক্টেড সদস্য ব্যতিত অন্য কাউকে ফরম দেওয়া হয়নি। সাবেক সভাপতি হিসেবে কারও কাছে ফরম বিক্রি করা বেআইনি হলেও প্রধান শিক্ষককে উপস্থিত রেখে স্কুল চলাকালীন সময়ে ২০/২৫ টি মটর সাইকেলসহ ৪০/৫০জন কর্মীদের নিয়ে পাহাড় রেখে ফরম বিক্রি করেন সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।
এ ঘটনা শোনার পর প্রধান শিক্ষকের নিকট ফরম কিনতে গেলে প্রধান শিক্ষক বলেন ফরম কিনতে সাবেক সভাপতির অনুমতি লাগবে এবং যার ফরম সে নিজে উপস্থিত হয়ে কিনতে হবে। ৩ নং ওয়ার্ডের নির্বাচিত ইউপি সদস্য মাহমুদ আলীর নামে ফরম কিনতে গেলে সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম ফরম কিনতে বাঁধাগ্রস্থ করে এবং হুমকি দেয়। এ ঘটনায় উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বর চাইলে মোবাইল নম্বর নাই বলে জানান সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলাম।
পরবর্তীতে প্রার্থীরা শিক্ষা অফিসারের সাথে যোগাযোগ করলে শিক্ষা অফিসার মো: ইসমাইল জানান, যে কেউ ফরম কিনতে পারবে এবং জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীকে উপস্থিত থেকে ফরম জমা দিতে হবে।
এরই মধ্যে শিক্ষা অফিসার মো: ইসমাইল অনৈতিক ভাবে সাবেক সভাপতি সৈয়দ রফিকুল ইসলামের বনানীর নিজস্ব কার্যালয়ে নিয়ম বর্হিভূত এবং প্রত্যেক প্রার্থীকে সরকারি ফি ৫ হাজার টাকার জায়গায় ১৫ হাজার টাকা গ্রহণ করে প্রার্থীতা বাছাই করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, যে বাচ্চারা স্কুলে পড়ালেখা করেনা তারা কোনো সদস্য হতে পারবে না এবং ফরমও কিনতে পারবে না। ফরম উন্মুক্ত ভাবে বিক্রয় করা হয়েছে। সকল কিছু যাচাই-বাছাই করেই প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, দাউদপুর পুটিনা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। সকল নিয়ম মেনেই সকল ব্যক্তিকে স্বতন্ত্রভাবে তার কাগজপত্র জমা দেওয়ার অধিকার আছে। যদি কেউ এ অধিকার ক্ষুন্ন করে তাহলে অবশ্যই সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন