বন্দর(নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি : ঋণের টাকা ফেরত না দিতে শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম(৫০)কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা মামলার এজাহার ভুক্ত আসামিদের পক্ষে এক মানববন্ধব করেছে বন্দর উপজেলা বিএনপির বির্তকিত কমিটির নেতৃবৃন্দ।
জানাগেছে, ঋণের পাওনা টাকা ফেরত দিতে শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগমকে বন্দর উপজেলা ধামগড় ইউপির দশদোনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে জামাতা রাসেদুল ইসলাম নান্টু মোবাইল ফোনে সোনারগাঁও ডেকে নিয়ে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সোনারগাঁও উপজেলার বস্তল এলাকায় এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের ডালে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নিখোঁজের পরদিন গত রোববার সকালে বোরকা পরিহত গামছা দিয়ে মূখ বাঁধা অবস্থায় ফাতেমা বেগমের লাশ উদ্ধার করে তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় গত রোববার রাতেই নিহতের ছেলে সাইফুল ইসলাম বাদি হয়ে জামাতা রাসেদুল ইসলাম নান্টুকে প্রধান আসামি করে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে সোনারগাঁও থানায় একটি হত্য মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামি জামাতা সোনারগাঁও পৌরসভা পুরান টিপরদী এলাকার মৃত কাজী আবুল কাশেমের রাসেদুল ইসলাম নান্টু(৪০), নান্টুর বড় দুই ভাই আব্দুল্লাহ(৫০) মাসুম(৪৫), বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউপির কামতাল গ্রামের মৃত ছাবেদ খন্দকারের তিন ছেলে মাসুদ রানা (৫০) জাহেদ খন্দকার (৩৯) ও সাইদ (৪০)। জাহেদ খন্দকার ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানাগেছে, ফাতেমা বেগম হত্যা মামলার ৫নং আসামি জাহেদ খন্দকার, সংঘবদ্ধ সিএনজি চোর ও চাঁদাবাজ। সিএনজি চুরির অপরাধে কুমিল্লা জেলা কারাগার থেকে জামিনে বের হয়। তার পর থেকে আন্তঃ জেলা সিএনজি চোর হিসাবে পুলিশের তালিকায় চিহৃিত করা হলে তার বাড়িতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিনিয়ত অভিযান অব্যহত থাকায় জাহিদ এলাকা ছেড়ে দিয়ে আত্নগোপনে চলে যায়। শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগের পর জাহিদ ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পরিচয়ে চুরি ছেড়ে দিয়ে গত এক মাসে সংঘবদ্ধ ভাবে চাঁদাবাজি ও হত্যা সহ নানা অপকর্মে জড়িয়ে পড়ে।
ওই মামলার ৪ নং আসামি মাসুদ রানা নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ঠিকাদার রাজু ভুঁইয়ার নিজস্ব গাড়ি চালক থাকাবস্থায় ৫ লাখ টাকা চুরি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় মাসুদ রানার পিতা ছাবেদ খন্দকার ও তার এক ভাইকে বিগত সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মাসুদ রানা নিজ নামে দলিল তৈরি করে আপন মামা মিজানুর রহমানের সম্পত্তি অন্যত্রে বিক্রি করায় গ্রামে সে নানা বিতর্কিত। এছাড়াও মাসুদ রানার বিরুদ্ধে সোনারগাঁও আরো একটি হত্যা সহ একাধিক মামলার আসামি। নিহত শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম, বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউপির দশদোনা গ্রামের করিম মিয়ার স্ত্রী।
নিহতের ছেলে সাইফুল ইসলাম জানান, , পূর্বের দারদেনা ও কিস্তি পরিশোধ জটিলতা সংক্রান্ত বিষয়ে মা ও ভগ্নিপতির মধ্যে পারিবারিক ভাবে দ্বন্দ্ব চলছিল। পূর্বপরিকল্পিত ভাবে গত শনিবার সকালে বকেয়া কিস্তির টাকা দেওয়ার কথা বলে মাকে ফোন করে সোনারগাঁও ভগ্নিপতির বাড়ির কথা বলে নিয়ে যায়। তারপর থেকে মা নিখোঁজ। এঘটনায় শনিবার রাতে বন্দর থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেছি। নিখোঁজের পরদিন গত রোববার সকালে সোনারগাঁও উপজেলার বস্তল এলাকায় এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের ডালে বোরকা পরিহত গামছা দিয়ে মূখ বাঁধা অবস্থায় আমার মায়ের লাশ উদ্ধার করে তালতলা তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশ। মামলার প্রধান আসামি নান্টু পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে আসামি বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহেদ খন্দকার ও অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জন মিলে একেঅপরের যোগসাজশে মাকে শ্বাসরোধ করে হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন আসামিদের বাঁচাতে বিএনপির লোকজন মামলা তুলে নিতে নানা ভাবে হুমকি দমকি প্রদান করছে। বর্তমানে মামলার বাদী হয়ে পরিবার নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে মামলার বাদীর অভিযোগ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন