নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ- নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শিখন সরকার শিপনের বিরুদ্ধে পূনরায় জোরপূর্বক দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে। আর পুনঃদখলে সহযোগিতা করেছেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খান। এক সময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন সাহার আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা শিখন সরকার এখন ভর করেছে মহানগর বিএনপি ও যুবদলের ঘাড়ে।
কথিত আছে শিখন এ্যাডঃ খোকন সাহার চেম্বার থেকে দৈনিক টাকা নিয়ে নিজের সংসার চালাতেন,আর এখন বনে গেছেন ধনকুবে,শতকোটি টাকার মালিক।
শিখন সরকার শিপন বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘ দশ বছর ধরে জোরপূর্বক এই পদে বহাল রয়েছেন তিনি। মহানগর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে সদস্য পদও বাগিয়ে নিয়েছেন খোকন সাহার আশীর্বাদে। তারপর আর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চাল,ডাল গমসহ সরকারি ও দেশী বিদেশী অনুদান লোপাটের অভিযোগ পড়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। উল্লেখ্য ২০২২ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করার দায়ে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি রবিউল হোসেনের হাত ধরে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক খোকন সাহার সঙ্গে পরিচয় ঘটে শিখন সরকার শিপনের। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে ২০১৪ সালে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদে অনেকটা জোর করেই শিপন সরকারকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করেন খোকন সাহা। তারপর থেকে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে থাকে শিখন সরকারের। আওয়ামী লীগের প্রভাব দাপট দেখিয়ে উকিলপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী বিএনপির কর্মী শেখ নাসিরের দুটি দোকান জোরপূর্বক দখলে নেন তিনি। আর তখন দোকান দুটি দখল করতে সাহায্যকারী হিসেবে খোকন সাহার দিকে আঙ্গুল উঠে। বৈশাখী ও অনুপম হোসিয়ারী নাম দিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যেতে থাকেন। বিএনপি কর্মী নাসির আদালতে মামলা করলেও খোকন সাহার কারণে পেরে ওঠতে পারেনি। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর শিখন সরকার শিপনের দখল থেকে নিজের দোকান দুটি উদ্ধার করেন শেখ নাসির। কিন্তু ধূর্ত শিখন,সরকার পরিবর্তনের পর বিএনপি নেতাদের সাথে হাত মিলান,ম্যানেজ করেন মহানগর বিএনপির এক শীর্ষ নেতাকে। এখন ওই নেতার নির্দেশে শিখনকে হিন্দু নেতা আখ্যায়িত করে তার পক্ষে দোকান উদ্ধারের নামে পুনরায় দখল করতে যান জেলা ও মহানগর যুবদলের দুইজন শীর্ষ নেতা। অসহায় শেখ নাসিরের কাছ থেকে দোকান পুন:দখল করে আবারও আওয়ামী লীগ নেতা শিখন সরকারের হাতেই তুলে দেন। শেখ নাসির দলিল কাগজপত্র দেখালেও কর্ণপাত করেনি যুবদলের নেতারা।
আগে দেখা না গেলেও সরকার পরিবর্তনের পর হিন্দুসম্প্রদায়ের বিভিন্ন কর্মকান্ডে মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন খানের সম্পৃক্ততা দেখা যায়। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে প্রতিটা মিটিংয়ে শিখন সরকারের পাশেই বসা থাকেন সাখাওয়াত। যদিও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা আন্দোলনে নিহত ও আহতের ঘটনায় মামলার আসামী হয়েছেন শিখন।
অন্যদিকে ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সময়ে উসকানি দিয়ে বিএনপি নেতাদের ছত্রছায়ায় নারায়ণগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়কে মাঠে নামানোর অভিযোগ আছে তার নামে। ইদানিং সরকার পতন হওয়ার পর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে,বিভিন্ন অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন মন্দিরে এবং অন্যান্য কমিটিতেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন