সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ-নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁ উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের এ.এন.জেড টেক্সটাইল মিলসের মালামাল লুট, ভাঙচুর এবং চাঁদা দাবির অভিযোগকে আড়াল করতে আশরাফ ভূঁইয়া রাতের আঁধারে একটি সংবাদ সম্মেলন ও একটি সাজানো মানববন্ধন করেন। এ ঘটনায় এলাকায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে স্থানীয়রা জানান, এ ঘটনা যদি আশরাফ ভূঁইয়া জড়িত না থাকেন তাহলে জনসম্মুখে এসে প্রমাণ করুক সে জড়িত নয়। নিজেকে নির্দোষ প্রমান করার জন্য দিন রেখে রাতকে কেন বেছে নিলেন তিনি?
স্থানীয় নেতাকর্মীরা জানান,যুবদল নেতা আশরাফ ভূঁইয়া ও ইউপি সদস্য মোতালেব মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি লুটপাট সহ গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়েরও করেন আনোয়ার হোসেন নামে এক ভুক্তভোগী। এসব অভিযোগ আড়াল করতে আশরাফ ভূঁইয়া বৃহস্পতিবার রাতের আঁধারে একটি সংবাদ সম্মেলন ও পরদিন বিকেলে একটি সাজানো মানববন্ধন করেছেন, রাস্তা থেকে টাকার বিনিময়ে কিছু লোক ধরে এনে মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করান বলে অভিযোগ করেন তারা। তারা বলেন আমরা মনে করি এটা সংবাদ সম্মেলন নয়! শুধুমাত্র নিজেকে বাঁচানোর জন্য শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা মাত্র। আশরাফ ভুইয়া যেহেতু নিজেকে নির্দোষ দাবি করছেন তাহলে সে জনসম্মুখে এসে প্রমাণ করুক সে এঘনায় জড়িত নয়।
জানা যায়, এ ঘটনার শুরুতে এ.এন.জেড টেক্সটাইল মিলসের মালিক আনোয়ার হোসেন, আশরাফ ভূইয়া ও মোতালেব মেম্বার সহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত নাম ১০০/১৫০জনকে বিবাদী করে সোনারগাঁ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, তার নির্মাণাধীন ভবনে কয়েকদিন আগে দুর্বৃত্তরা শ্রমিকদের মারধর করে ২৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে, ১৫ জানুয়ারি সকালে আশরাফ ভূঁইয়া ও মোতালেব মেম্বারের নেতৃত্বে তার প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়।
এসময় হামলাকারীরা শ্রমিকদের আটকে রেখে মিলসের মালামাল লুট করে, যার আনুমানিক মূল্য প্রায় এক কোটি টাকা। মালামালের মধ্যে ছিল ৩৪ টন রড, ৭০০ বস্তা সিমেন্ট এবং ৩০ টন আইবিম।পরে হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এবং অস্ত্র প্রদর্শন করে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে প্রকাশ্যে গাড়ি দিয়ে মাল নিয়ে যায়।
এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে, আশরাফ ভূঁইয়া তার নিজ কার্যালয়ে রাতের আঁধারে এক সংবাদ সম্মেলন করেন। সেখানে তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, মিলস কর্তৃপক্ষ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের প্ররোচনায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে। তিনি আরও দাবি করেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বিগত সরকারের সময় এলাকায় জমি দখল করেছে এবং তার সুনাম নষ্ট করতে ষড়যন্ত্র করছে।
এবিষয়ে মিলসের মালিক আনোয়ার হোসেন জানান, হামলার ঘটনায় তালতলা ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করা হলেও রহস্যজনক কারনে পুলিশ এখনো কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেনি। উল্টো তালতলা ফাঁড়ির ইনচার্জ হামলাকারীদের কাজে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ করেন । অনতিবিলম্বে ঘটনার সত্যতা যাচাই করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এলাকাবাসী জানান, ৫ই আগষ্ট শেখ হাসিনা ক্ষমতা ছেড়ে ভারত চলে যাওয়ার পর আশরাফ ভুইয়া সোনারগাঁ, আরাই হাজার ও রূপগঞ্জের লোকজন নিয়ে একটি বাহিনী তৈরী করেছেন। ওই বাহিনী জামপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন লোকজনের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে। তার এমন কর্মকান্ডে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে।এবিষয়ে দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তারা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন