বিশেষ প্রতিনিধিঃ- এবার আশ্চর্য্যজনক ঘটনা ঘটেছে রূপগঞ্জে । পরিবেশ ধ্বংশকারী ইটভাটায় মোবাইল কোর্ট, জরিমানা, ভাংচুর ও বন্ধের প্রতিবাদে রূপগঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার অসাধু চক্রের সদস্যরা ।
যার কারণে ব্যাপক সমারোচনার ঝড় উঠেছে এলাকাজুড়ে।
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ব্যানারে অসাধু চক্র মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুরে বিক্ষোভ শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামের হাতে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা, ও উপদেষ্টা পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন, মন্ত্রণালয়ের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন।
রূপঞ্জে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ সমাবেশে এ সময় উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা ইটভাটা প্রস্তুতকারী সমিতি সহ সভাপতি সাইফুল ইসলাম হিরন মাষ্টার, সদস্য শামসুল আলম, জহিরুল ইসলাম, বুলবুল, শরীফ মিয়া, জাকির হোসেনসহ রূপগঞ্জের বিভিন্ন ইটভাটার অসাধু চক্রের সদস্যরা।
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির রূপগঞ্জ শাখার অসাধু চক্রের সদস্যরা এ সময়বলেন, তারা বিগত ৩৫ থেকে ৪০ বছর ধরে প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে ইটভাটার ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। দেশের রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ সব অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহৃত ইট সরবরাহ করে আসছে এই ইট ভাটা থেকে । সর্বত্র উন্নয়নের সঙ্গে সমতা রেখে বায়ুদূষণ রোধে সরকার নির্দেশিত আধুনিক প্রযুক্তির জিগজাগ ভাটা স্থাপন করে। যা জ্বালানি সাশ্রয়ী, পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি, টেকসই এবং সহজ প্রযুক্তি হিসেবে পরিচিত। এই শিল্পে প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রমিক কর্মরত আছে। এছাড়াও প্রায় প্রতিটি ইট ভাটার বিপরীতে ১ কোটি টাকার উপরে ব্যাংক লোন আছে। ভাটাগুলো বন্ধ হয়ে গেলে ব্যাংক লোন অনাদায়ী হবে।
বর্তমান সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান অত্যন্ত আন্তরিক হলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে জিগজাগ ইটভাটার সমস্যা সমাধান হচ্ছে না। ড্রাম চিমনি, ফিক্সড চিমনি ও লাকড়ি দিয়ে পোড়ানো ইটভাটা সম্পূর্ণ বন্ধ করা সিদ্ধান্তে উপদেষ্টার সঙ্গে আমরা একমত পোষণ করেতেছি।
কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা না করে তার বিপরীতমুখী অবস্থান নিয়ে বৈধ পদ্ধতির জিগজাগ ইটভাটায় জরিমানা ও ভাংচুর করতেছে। আমরা আশা করছি প্রধান উপদেষ্টা এবং পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার মাধ্যমেই ইটভাটা পরিচালনার একটি যৌক্তিক সমাধান হবে।
আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা, বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছি। তারা যেন আমাদের বিষয় গুলো বিবেচনা করে দ্রুত এ সমম্যার সমাধান করেন।
বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির ব্যানারে অসাধু চক্রের এমন ঘেরাও ও বিক্ষোভ সমাবেমের ঘটনায় রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি, অবৈধ ইট ভাটা গুলো বন্ধের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আর বৈধ যেগুলো রয়েছে তারা তাদের কার্যক্রম সঠিক নিয়মে পরিচালনা করতে পারবে। আর আজকে রূপগঞ্জে অবৈধ ইট ভাটার মালিকরা এখানে মানববন্ধন করেছে একটি স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টা বরাবর জমা দিয়েছেন আমাদের মাধ্যমে। আমরা জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর পাঠানো হবে।
এমন ঘটনার পর নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে বাংলাদেশ ইট প্রস্তুতকারী মালিক সমিতির রূপগঞ্জ উপজেলা শাখার একজন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা যারা ইটভাটার মালিক তাদের কেউ দেশের প্রচলিত আইন মেনে কোন ইটভাটা পরিচালিত করতে পারবো না। কোন না কোন ত্রুটি বিচ্যুতি থাকবেই আমাদের । আর আইন ভঙ্গ করেই চালাতে হয় ইটভাটা। আর রূপগঞ্জে এখন আর কোন বসতি ছাড়া কোন খালি ও খোলা ভূমি নাই। আর এই কারণে একদিকে পরিবেশ অধিদপ্তরে ঘুষ দিয়েই কাজ করতে হয়। ঘুষ ছাড়া এমন কোন ইটভাটা পরিচলনা হবে তার সুৃযোগ নাই। এর সাথে রাজনৈতিক নেতা। এরপরও ভ্যাট অফিসের ঘুষ । সর্বত্রই যেন ঘুষের কান্ড। ঘুষ না দিলেই উচ্ছেদ নামক নাটক করে ঘুষ টার্গেট পূর্ণ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু চক্র। এই ঘুষের কারণেই আজ এই সমাবেশ করতে হয়েছে । তাও ওই পরিবেশ অধিদপ্তরের অসাধু কর্তাদের পরামর্শ অনুয়ায়ী এই সমাবেশ করতে বাধ্য হয়েছি ।”
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন