মোঃ নুর নবী জনিঃ-বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা জোরদারের লক্ষ্যে চীনের সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এবং জাতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রশাসনের প্রধান লি কুউনসহ ৬ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলসহ নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ে ঐতিহাসিক পানাম সিটি পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শনকালে চীনা প্রতিনিধিদলকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান নারায়ণগঞ্জ জেলার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মঞ্জুরুল মোর্শেদ ও সহকারী কমিশনার (ভূমি), কাঁচপুর সার্কেল, সেগুফতা মেহনাজ, সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আব্দুল বারীসহ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের কর্মকর্তারা।
এসময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা চীনা উপমন্ত্রী লি কুউন এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে পানাম সিটির বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনা ঘুরে দেখান এবং বাংলাদেশের পুরাকীর্তি সংরক্ষণ ও উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।
চীনা উপমন্ত্রী পানাম সিটিকে মানব সভ্যতার এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা হিসেবে উল্লেখ করেন। এ সময়, তারা বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণা ও ঐতিহ্য সংরক্ষণে চীন-বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগের গুরুত্ব তুলে ধরে আশা প্রকাশ করেন যে, ভবিষ্যতে এই সহযোগিতা আরও বিস্তৃত হবে।
নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, "বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা সংরক্ষণে চীনের সহযোগিতা একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। পানাম সিটির সংরক্ষণ ও গবেষণার ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।" তিনি আরও উল্লেখ করেন, বর্তমান সরকার তিনটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে এবং সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে, যার মধ্যে পানাম সিটি অন্যতম। পানাম সিটির ঐতিহাসিক গুরুত্বকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে একটি রেপ্লিকা স্থাপন করার কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করা হয়েছে।
সর্বশেষে, চীনা উপমন্ত্রী যে এলাকা থেকে নির্বাচিত হন, সেখানে অনুষ্ঠিত হওয়া সবচেয়ে বড় ঘুড়ি উৎসবের প্রতি সম্মান জানিয়ে জেলা প্রশাসক বাংলাদেশের প্রতীক হিসেবে একটি ঘুড়ি এবং স্থানীয় কারু ও হস্তশিল্পের নিদের্শন উপহার দেন। চীনের ভাইস মিনিস্টারও চীনের স্থানীয় কারু ও হস্তশিল্পের নিদর্শন হিসেবে উপহার প্রদান করেন। উভয় পক্ষ একত্রে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণে সহযোগিতা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন, এবং জেলা প্রশাসক এই বিষয়ে যেকোনো ধরনের সাহায্য প্রদানের আশ্বাস দেন। জেলা প্রশাসক এই আন্তরিক আগ্রহের জন্য চীনা উপমন্ত্রীসহ পুরো প্রতিনিধিদল তাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।
এই পরিদর্শনের মাধ্যমে চীন-বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।