Wednesday, October 29, 2025
Google search engine
Homeনারায়ণগঞ্জসোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান

সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান


মোঃ নুর নবী জনিঃ
-নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে অবস্থিত সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।  যা সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার মান নিশ্চিত করতে ২০২২ সালে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হিসেবে যাত্রা শুরু করে।

এরপর সরকারের নানান উদ্যোগে ও স্থানীয় সংসদ সদস্য জননেতা লিয়াকত হোসেন খোকার দিক নির্দেশনায় ও স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা হক এর অক্লান্ত পরিশ্রমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ধাপে ধাপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগতে থাকে। চিকিৎসক ও কর্মচারীদের আন্তরিকতা এবং সেবা প্রদানে চিকিৎসকদের মানবিক আচরণের কারণে এলাকার গন্ডি পেরিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটির সুনাম। বর্তমানে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিরাপদ স্বাভাবিক নিরাপদ প্রসব করা হয় শুধু তাই নয় ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ৬৯৮ টি স্বাভাবিক প্রসব ও ১১৪ টি সিজারিয়ান সেকশন হয়। এছারাও জাতীয়ভাবে সারা বাংলাদেশের মধ্যে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্কোরিং এ প্রথম পুরস্কার পেয়েছেন সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। 

এ বছর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দৃষ্টিনন্দন করে তোলার লক্ষ্যে ফাঁকা জায়গাসহ আনাচে কানাচে বিভিন্ন জাতের ফুলের গাছ লাগানোর ফলে পাল্টে গেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির দৃশ্য। ফাঁকা জায়গার পাশাপাশি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বারান্দা জুড়ে টবে রয়েছে নানা রকম পাতাবাহার গাছ। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিত্যক্ত কিছু জায়গায় রোপন করা হয়েছে নানা রকম ফলজ ও ওষুধি গাছ। পূর্বপাশে রয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নকৃত ভেষজ বাগান। এছাড়া সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে ৯০ শতাংশ জায়গা জুড়ে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি পুকুর যার চারদিকে রয়েছে সাড়ি সাড়ি নারিকেল গাছ। 

চিকিৎসা নিতে আসা রোগীসহ এলাকার মানুষের মন কেড়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির দৃষ্টি নন্দন ফুল বাগান। সেবা নিতে আসা রোগীদের মাঝে চারদিকে ফুলের বাগানের মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে দেয় স্বস্তির ছোঁয়া। 

অপর দিকে হাসপাতালের অপরিতক্ত্য কিছু জায়গায় বপন করা হয়েছে নানা রকম শাক সবজির গাছ। সবকিছু মিলে মুগ্ধতার এক অপরূপ দৃশ্য যা সত্যিই মন কাড়ার মতো।  

৫০ শয্যার সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার পাশাপাশি রয়েছে মুজিব কর্নার, রয়েছে বিভিন্ন এলাকা হতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর স্বজন ও বাচ্চাদের বিনোদনের জন্য নানাবিধ খেলনা দিয়ে সাজানো শিশু কর্ণার। রোগী এবং তাদের স্বজনদের সাথে আসা শিশুরা খানিকটা সময় মনের আনন্দে খেলায় মেতে উঠে। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা সনমান্দী ইউনিয়ন থেকে আসা ঝর্ণা জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সেবার মান বেশ ভালো। সব সময় পরিস্কার করা হয় কক্ষগুলি। এখানে সবচেয়ে ভালো লাগে ফুলের বাগানগুলি। সকালে ঘুম ভেঙ্গে বারান্দায় দাঁড়িয়ে যখন ফুলের বাগানের দিকে তাকিয়ে থাকি তখন প্রাণটা জুড়িয়ে যায়। নিজেকে আর অসুস্থ্য মনে হয় না। 

বারদী ইউনিয়ন থেকে আসা মোঃ আমিন নামে রোগীর এক স্বজন জানান, আমার প্রতিবেশী এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে। তাকে আমি দেখতে এসেছি। এখানে এসে জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি শুধু ফুল আর ফুল। নানান রং-বেরংগের ফুল দিয়ে ঘেরা এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেটি। বাড়ী ফেরার পথে আমি ফুলের বাগানে অনেকটা সময় কাটিয়ে দিলাম। তবে এখানে চিকিৎসার পাশাপাশি ফুলের বাগানটি আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা মোশাররফ হোসেন সিজান জানান, ২০২২ সালে সারা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা স্কোরিং এ প্রথম স্থান অধিকার করেন আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।

এ ছাড়াও বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আরও কিছু পুরুস্কার প্রাপ্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে গর্বিত করেছে। আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডা. সাবরিনা হক ম্যাডাম যোগদান করার পর থেকেই ফুলের বাগান বর্ধিত করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরো ক্যাম্পাস বিস্তৃত করা হয়েছে। এ কারণ হচ্ছে রোগীরা যখন সেবা নিতে আসে তখন তারা প্রথমে দেখে সেবার মান এবং সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ মনোরম কিনা। মানুষ অসুস্থ্য হলে শারিরিক ও মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। শুধু পথ্য দিয়ে তাদেরকে সুস্থ্য করা গেলেও মানসিক ভাবে সুস্থ্য রাখতে হলে মনোরম পরিবেশের দরকার আছে।  

সোনারগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা হক বলেন, সুস্থ্য দেহ সুস্থ্য মন। আমরা তো শুধু দেহ সুস্থ্য রাখার চেষ্টা করি। সুস্থ্য দেহের পাশাপাশি একটা সুস্থ্য মন থাকা প্রয়োজন। মানুষকে সুস্থ্য করে তোলার সাথে তাদের মনের সুস্থ্যতাও ধরে রাখার জন্য এ বাগান তৈরীর মূল উদ্যেশ্য। একজন রোগী যদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চারপাশে বাগান আর ফুলের ছড়াছড়ি দেখে তাহলে স্বাভাবিক ভাবে রোগীটির মনের মধ্যে ভিন্ন অনুভূতি জন্মাবে। এতে করে রোগী দ্রুত সুস্থ্যতা লাভ করবে। তিনি আরও বলেন আমাদের উদ্যোগগুলি ছিল সবার সন্মিলিত প্রচেষ্টার ফসল।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -
Google search engine

Most Popular

Recent Comments